সবাই এখন বাংলাদেশকে সমীহ করে : প্রধানমন্ত্রী
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণে হাত দেওয়ার ফলে বাংলাদেশের প্রতি বিশ্ববাসীর দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হয়েছে। সবাই এখন বাংলাদেশকে সমীহ করে কথা বলে।’
রবিবার (৩ ডিসেম্বর) রাতে কম্বোডিয়ার হোটেল সোফিটেলে এক নৈশভোজে তিনি এসব কথা বলেন। খবর- বাসসের।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশে যারা ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন তারা দেখবেন, আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো মেগা প্রজেক্ট নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়ায় বিশ্ববাসী এখন বাংলাদেশকে ভিন্ন চোখে দেখতে শুরু করেছে। বিজয়ী জাতি হিসেবে বাংলাদেশ সবসময় এভাবেই মাথা উঁচু করে চলবে।’
পদ্মা সেতু নির্মাণ বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেকেরই ধারণা ছিল, বিশ্বব্যাংকের সাহায্য ছাড়া আমরা এটা নির্মাণ করতে পারবো না। কিন্তু আমি বলেছি, আমরা পারবো ও করে দেখাবো। আমরা মিথ্যা অভিযোগ কেন মাথা পেতে নেবো। এটা সত্যি যে এর ফলে আমাদের অনেক সমস্যা পোহাতে হয়েছে। তবুও আমরা চ্যালেঞ্জটা নিয়েছি। আমরা আমাদের নিজস্ব সামগ্রী বিশেষ করে সিমেন্ট ও স্টিল দিয়ে সেতুটি নির্মাণ করছি।’
প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে এই নৈশভোজের আয়োজন করেন থাইল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও বর্তমানে কম্বোডিয়ার অ্যাক্রিডেটেড সাইদা মুনা তাসনিম। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে শেখ রেহানাও এ অনুষ্ঠানে ছিলেন।
কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের আমন্ত্রণে তিন দিনের সফরে গেছেন প্রধানমন্ত্রী। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে চড়ে রবিবার স্থানীয় সময় দুপুর সাড়ে ১২টায় নমপেন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বিমান থেকে নামলে একটি কম্বোডিয়ান শিশু তাকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানায়। এরপর দেওয়া হয় লালগালিচা সংবর্ধনা। এ সময় নমপেনে বসবাসকারী প্রবাসীরা বাংলাদেশের পতাকা নেড়ে অভিবাদন জানায়।
অভ্যর্থনা শেষে মোটর শোভাযাত্রায় প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয় হোটেল সোফিটেলে। তার সফর উপলক্ষে বিমানবন্দর থেকে নগরীর সড়কগুলো বাংলাদেশ ও কম্বোডিয়ার পতাকা ও দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছে।
রবিবার বিকালে কম্বোডিয়ার স্বাধীনতা স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছেন শেখ হাসিনা। এরপর কম্বোডিয়ার প্রয়াত রাজা নরোদম সিহানুকের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তিনি। এদিন নমপেনের কেন্দ্রস্থলে তুল সেলং জেনোসাইড মিউজিয়াম পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী।
সোমবার কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার এই সফরে দুই দেশের মধ্যে ১১টিরও বেশি ইনস্ট্রুমেন্ট, দু’টি চুক্তি ও ৯টি সমঝোতা স্মারক হওয়ার কথা রয়েছে। ঢাকা ও নমপেনের দু’টি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক দুই দেশের জাতির পিতার নামে নামকরণের ঘোষণাও দেওয়া হবে।
সফর শেষে আগামী ৫ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে। তার সফরসঙ্গী হিসেবে অন্যান্যের মধ্যে রয়েছেন বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি প্রকল্পের প্রধান সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ, পররাষ্ট্র সচিব এম. শহীদুল হক ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
(দ্য রিপোর্ট/এনটি/ডিসেম্বর ০৪, ২০১৭)