দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : জাতিসংঘে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আবারো সরে দাঁড়ালো বাংলাদেশের বন্ধুরাষ্ট্র ভারত। মঙ্গলবার জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের বিশেষ অধিবেশনে বাংলাদেশের একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়। সেখানে ভোটদানে বিরত থাকে ভারত।

এর মধ্য দিয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্রটি বাংলাদেশের শরণার্থী সংকট নিয়ে আবারো প্রশ্নবিদ্ধ অবস্থান জানান দিলো বলে মনে করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের প্রস্তাবে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের এই বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়। অধিবেশনে কাউন্সিলের সদস্য ৪৭টি দেশের মধ্যে ৩৩টি বাংলাদেশের প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। আর চীনসহ তিনটি দেশ প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়। তবে ভারতসহ ৯টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। বিশেষ ওই অধিবেশনে ৪৭টি সদস্য দে‌শের মধ্যে ৪৫টি অংশ নেয়।

এদিকে শুরু থেকেই রোহিঙ্গা সংকটের সুষ্ঠু সমাধানের প্রতি জোর দিলেও জাতিসংঘে এ ইস্যুতে বরাবরই নিরব থেকেছে ভারত।

এর আগে ১৬ নভেম্বর বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের অ্যাজেন্ডা নির্ধারণের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে ভোটাভুটিতে ভারত ভোটদানে বিরত থাকে।

মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর জোট ওআইসি’র আহবানে ওই ভোটাভুটির আয়োজন করেছিল জাতিসংঘ। এতে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর সামরিক অভিযান বন্ধের প্রস্তাব পাশ হয়।
তখন মিয়ানমারের রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে এ ভোটাভুটিতে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেনসহ ১৩৫টি দেশ। মিয়ানমারের পক্ষে ভোট দেয় চীন, রাশিয়াসহ ১০টি দেশ। তবে ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকে ভারত, নেপাল, শ্রীলংকাসহ দক্ষিণ এশিয়ার ২৬টি দেশ।

বাংলাদেশের অনুরোধে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল মঙ্গলবার ‘মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠী ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক বিশেষ অধিবেশনটি ডেকেছিল। অধিবেশনে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের বিষয়ে একটি প্রস্তাবের খসড়া দেয়।

অধিবেশনের উদ্বোধনী পর্বে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার জেইদ রাদ আল হুসেইন বলেন, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর চরম নৃশংসতার জন্য গণহত্যার দায়ে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর বিচার হতে পারে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত চালাতে একটি নিরপেক্ষ ও স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের সুপারিশের অনুরোধ বিবেচনা করার অনুরোধ জানান তিনি।

জেনেভায় মিয়ানমারের স্থায়ী প্রতিনিধি তিন লিন প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বলেন, মানবাধিকারের ক্ষেত্রে সবার জন্য সুরক্ষা অপরিহার্য, সেখানে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রস্তাবটি বাজে দৃষ্টান্ত তৈরি করতে যাচ্ছে।

এসময় তিনি জানান, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে মিয়ানমার সরকার। রাখাইনের পরিস্থিতি উন্নয়নে তার দেশে জাতিসংঘকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুতও বলে জানান মিয়ানমারের দূত।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/ডিসেম্বর ০৬, ২০১৭)