দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : শিশু আইনের সংশোধনীর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রী পরিষদে পাঠানো হয়েছে বলে আদালতকে জানিয়েছে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়। চলতি সংশোধন অধিবেশনেই আইনটি পাশের জন্য সচিবরা ব্যবস্থা নেবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।

রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমম্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ প্রতিবেদন দাখিল করে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়।

আদালতে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আশিকুর রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইউসুফ মাহমুদ মোরশেদ।

পরে ব্যারিস্টার আশিকুর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, আমরা আদালতকে জানিয়েছি, শিশু আইনের সংশোধনের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রী পরিষদে পাঠানো হয়েছে। আদালত চলতি অধিবেশনেই যেন সংশোধনীটা পাশ হয় সে বিষয়ে তাগিদ দিয়েছেন।এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২৫ মার্চ দিন ধার্য করেছেন আদালত।

এর আগে গত ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ সালে প্রণীত শিশু আইনের অস্পষ্টতা দূরীকরণে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানাতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

এর আগে শিশু আইন নিয়ে আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন না করায় সমাজ কল্যাণ সচিব ও লেজিসলেটিভ ও ড্রাফটিং সচিবকে তলবও করেছিলেন আদালত।

২০১৬ সালের ৩১ অক্টোবর আদালতের আদেশ অনুযায়ী ব্যাখ্যা না দেওয়ায় রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ঢাকা, কক্সবাজার ও রংপুরে শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে দায়েরকৃত পৃথক চারটি মামলার আসামিরা হাইকোর্টে জামিনের আবেদন জানান। এসব মামলার সব আসামি প্রাপ্তবয়ষ্ক। শিশু আদালত এসব প্রাপ্তবয়ষ্ক আসামিদের জামিনের আবেদন শুনানির জন্য গ্রহণ করায় হাইকোর্ট রুল জারি করেন।

একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারকদেরকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। হাইকোর্টের নির্দেশ অনুসারে চারটি আদালতের বিচারকরা নিজ নিজ ব্যাখ্যা লিখিতভাবে আদালতে দাখিল করেন।

ব্যাখ্যায় ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘দ্য চিলড্রেন অ্যাক্ট, ১৯৭৪’ এর বিধান অনুযায়ী যেসব মামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা ভিকটিম শিশু ওইসব মামলা বিচারের জন্য কিশোর আদালতে প্রেরণ করা হতো। আর যেসব মামলার কেবল অভিযুক্ত ব্যক্তি শিশু, ওই সব মামলার অপরাধ আমলে নেওয়ার পর মামলাটি বিচারের জন্য কিশোর আদালতে পাঠানো হতো। কিন্তু ‘শিশু আইন, ২০১৩’ এর ১৭(১) ধারার পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে অস্পষ্টতা দেখা দিয়েছে।

কারণ ওই ধারায় বলা হয়েছে, ‘আইনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িত শিশু বা আইনের সংস্পর্শে আসা শিশু কোনো মামলায় জড়িত থাকলে যেকোনো আইনের অধীনেই হোক না কেন, ওই মামলা বিচারের এখতিয়ার কেবল শিশু আদালতের থাকবে।’

তবে আইনের ধারা ১৮, দফা-(ক) এ শিশু আদালতকে ফৌজদারি কার্যবিধির দায়রা আদালতের ক্ষমতা দেওয়া হলেও ওই আইনে শিশু আদালতকে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০’ এর কোনো ধারার অপরাধ আমলে নেওয়া কিংবা বিচারের সুনির্দিষ্ট এখতিয়ার দেওয়া হয়নি। শিশু আইনের ৩৩(১) ধারা অনুসারে শিশু আদালত অভিযুক্ত কোনো শিশুকে মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিতে পারবেন।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৮)