দিরিপোর্ট২৪ প্রতিবেদক : পরিবহন মালিক সমিতির নেতা হত্যার প্রতিবাদে রাজধানীতে শুক্রবার সকাল থেকে বাস ধর্মঘট চলছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির ডাকা এই ধর্মঘটের কারণে বিভিন্ন পর্যায়ের পরক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন।

তবে জেএসসি, জেডিসি ও প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার্থীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে মালিক সমিতি ধর্মঘট কিছুটা শিথিল করেছে। ঢাকার অভ্যন্তরীণ রুটে দুপুর ১২টা থেকে অভ্যন্তরীণ রুটে বাস চলাচলের এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অন্যদিকে দুপুর ২টার পর ঢাকা থেকে বিভিন্ন এলাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া দূরপাল্লার বাস চলবে।

রাজধানীর বিভিন্ন বাস টার্মিনাল ঘুরে এবং পরিবহন মালিক সমিতির সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, গাবতলী, সায়দাবাদ ও মহাখালী থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। ঢাকার বাইরে থেকে আসা দূর পাল্লার বাস রাজধানীতে ঢুকতেও দেওয়া হচ্ছে না।

ঢাকা সড়ক পরিবহন সমিতির সাধারণ সম্পাদক এনায়েত উল্লাহ জানান, সায়েদাবাদ টার্মিনালে দিনব্যাপী ধর্মঘট চলবে। এ টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রাম, সিলেট, নোয়াখালী, কুমিল্লা রুটে বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।

এছাড়া, গাবতলী ও মহাখালী বাস টার্মিনালে দুপুর ২টা পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে বলেও জানান তিনি।

ঢাকা পরিবহন মালিক সমিতি অবিলম্বে খায়রুল আলম মোল্লার হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেছে।

শুক্রবার রাজধানী ঘুরে দেখা গেছে, ধর্মঘটের কারণে অভ্যন্তরীণ রুটেও বাস চলছে না। পাশাপাশি শুক্রবার সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে সিএনজি ও ছোট ছোট লেগুনাও কম চলাচল করতে দেখা গেছে।

শুক্রবার সকালে মিরপুর, ফার্মগেইট, মতিঝিল, সায়দাবাদ, যাত্রবাড়ি, গাবতলী, মালিবাগ, রামপুরা, মগবাজার, মহাখালীসহ রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় সাধারণ মানুষদের দূর্ভোগ চোখে পড়েছে। শত শত যাত্রীকে গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য যানবাহনের অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে।

ডেমরার মহসিন হক জানান, তিনি ব্যাংকার। তার ছেলের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা। কিন্তু বাসা থেকে বের হয়ে কোনো বাহন পাচ্ছেন না। এমনকি সিএনজিও পাচ্ছেন না।

তিনি বলেন, ধর্মঘটের কথা আগে থেকে জানতাম না। জানলে হয়তো বিকল্প প্রস্তুতি নেওয়া যেত। এদিকে ছেলের ভর্তি পরীক্ষা, বুঝে উঠতে পারছি না কী করবো।

রামপুরার সায়মা হক জানান, তিনি মাকে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য শুক্রবার সকালে বাসা থেকে বের হন। কিন্তু ধর্মঘটের কারণে বাইরে এসে কোনো বাস পাচ্ছেন না। তাই উপায় না পেয়ে আবার বাসায় ফিরে যাচ্ছেন।

রাজধানীতে চলাচলা করা ২২ নম্বর বাসের চালক মো. আমজাদ হোসেন জানান, হরতালের মধ্যে ভয়-ভীতি থাকা সত্ত্বেও তারা গাড়ি বের করেন। কিন্তু তাদের মালিকদের একজন খুন হওয়ার প্রতিবাদে শুক্রবার সন্ধ্যার আগে রাজধানীতে চালকদের কেউই গাড়ি বের করবেন না।

উল্লেখ্য, রাজধানীর মতিঝিলের সমবায় ব্যাংক ভবনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় খায়রুল আলম মোল্লা (৪৫) নামে পরিবহন মালিক সমিতির নেতা খুন হন। এর প্রতিবাদে শুক্রবার রাজধানীতে বাস ধর্মঘট ডেকেছেন পরিবহন মালিকরা।

খুনের ঘটনার পর রাতেই এ ধর্মঘটের ডাক দেয় ঢাকা সড়ক পরিবহন সমিতি। খায়রুল সায়েদাবাদ পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।

(দিরিপোর্ট২৪/এইচআর/এইচএসএম/নভেম্বর ০৮, ২০১৩)