বাগেরহাটে অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ ২৭ বনদস্যুর আত্মসমর্পণ
বাগেরহাট প্রতিনিধি: বাগেরহাটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দিয়ে ২৭ বনদস্যু আত্মসমর্পণ করেছেন।
রবিবার জেলা শহরের স্বাধীনতা উদ্যানে এক অনুষ্ঠানে তারা আত্মসমর্পণ করেন।
আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে সুন্দরবনের তিনটি বনদস্যু বাহিনীর সদস্য রয়েছেন বলে র্যাব-৮ এর সিইও হাসান ইমন আল রাজীব জানান।
সিইও বলেন, আত্মসমর্পণকারী বাহিনী তিনটি হলো জাহাঙ্গীর ওরফে ছোট জাহাঙ্গীর বাহিনী, ছোট সুমন বাহিনী এবং মেহেদী হাসান ওরফে ডন বাহিনী।
বনদস্যুরা তাদের ব্যবহৃত ১৩টি একনলা বন্ধুক, তিনটি বিদেশি দোনলা বন্ধুক, চারটি ২২ বোর বিদেশি রাইফেল, সাতটি পাইপগান, একটি বিদেশি ওয়ান শুটারগানসহ ২৮টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং এক হাজার ৮১টি গোলাবারুদ জমা দেয়।
আত্মসমর্পণকারী দস্যুদের প্রত্যেককে ২০ হাজার করে টাকা এবং একটি করে মোবাইল ফোন সেট দেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে জলদস্যু, সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের এ দেশে কোনো স্থান নেই, অচিরেই তাদের নির্মূল করা হবে। সুন্দরবনে কাউকে দস্যুতা করতে দেয়া হবে না। শুধু সুন্দরবনে নয় দেশের কোথাও জঙ্গি কর্মকাণ্ড, সন্ত্রাস ও দস্যুতা করতে দেওয়া হবে না।
সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল পেশাজীবী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বন ও জলদস্যুদের হাত থেকে রক্ষা করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে দাবি তুলেছিল বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, সরকার তাদের দাবি একে একে পূরণ করার চেষ্টা করেছে। সুন্দরবন এখন অনেকটাই দস্যুমুক্ত। সুন্দরবনে কাউকে দস্যুতা করতে দেব না।
মাদক নির্মূলে বর্তমান সরকারের পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, মাদক বন্ধ করতে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। মাদক ব্যবসায়ীরা ইয়াবা নামক একটি মাদক সারাদেশে ছড়িয়ে দিয়েছেন।
যারা এই মাদক ব্যবসা করছেন তাদের নাম ঠিকানা আমরা পেয়ে গিয়েছি। আমরা আপনাদের ঘোষণা দিয়ে বলতে চাই আপনারা যদি মাদক বিক্রি কাজটি বন্ধ না করেন তাহলে খুব শিগগির দেখতে পাবেন পরিণতি কী হয়।
সরকার মাদক আইন সংশোধন করছে উল্লেখ করে কামাল বলেন, সারাদেশে কারাগারগুলোতে অপরাধী ধারণ ক্ষমতা ৩৫ হাজার। সেখানে রয়েছে প্রায় ৭৮ হাজারেরও বেশি অপরাধী। এর মধ্যে ২৫ হাজারের বেশি অপরাধী মাদকের মামলায় কারাগারে রয়েছেন। এত মামলা হচ্ছে তার পরেও মাদক কমছে না। তাই আমরা কঠোর থেকে আরও কঠোর হচ্ছি।
র্যাব-৬ এর অধিনায়ক খন্দকার রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন স্থানীয় সাংসদ মোজাম্মেল হোসেন, সাংসদ তালুকদার আব্দুল খালেক, সাংসদ শওকাত আলী বাদশা, র্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া, পুলিশের খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি হাবিবুর রহমান, বিজিবি খুলনা রেঞ্জের প্রধান ব্রিগেডিয়ার খালেক আল মামুন, র্যাব-৮ এর সিইও হাসান ইমন আল রাজীব, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস, পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায় প্রমুখ।
(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/এপ্রিল ০১, ২০১৮)