কড়া নিরাপত্তায় এইচএসসি পরীক্ষা শুরু
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসরোধে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে সারাদেশে শুরু হচ্ছে উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা।
সোমবার (২ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে দেশের দুই হাজার ৫৪১টি কেন্দ্রে একযোগে অনুষ্ঠিত হয় এই পরীক্ষা। এবার মোট পরীক্ষার্থী ১৩ লাখ ১১ হাজার ৪৫৭ জন।
এবার তত্ত্বীয় পরীক্ষা ২ এপ্রিল, সোমবার থেকে শুরু হয়ে ১৩ মে এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা ১৪ মে থেকে শুরু হয়ে ২৩ মে শেষ হবে।
সোমবার প্রথম দিন এইচএসসিতে বাংলা (আবশ্যিক) প্রথম পত্র, সহজ বাংলা প্রথম পত্র, বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশের সংস্কৃতি প্রথম পত্র এবং ডিআইবিএস-এ বাংলা (আবশ্যিক) প্রথম পত্রের পরীক্ষা হবে। আর মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে আলিমে কুরআন মাজিদ এবং কারিগরি বোর্ডের অধীনে এইচএসসি ব্যবসায় ব্যবস্থাপনায় সকালে বাংলা-২ (নতুন সিলেবাস) ও বাংলা-২ (পুরাতন সিলেবাস) এবং বিকেলে বাংলা-১ (সৃজনশীল নতুন সিলেবাস) ও বাংলা-১ (সৃজনশীল পুরাতন সিলেবাস) পরীক্ষা হবে।
চলতি বছর ৮ হাজার ৯৪৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৩ লাখ ১১ হাজার ৪৫৭ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে ৬ লাখ ৯২ হাজার ৭৩০ ছাত্র এবং ৬ লাখ ১৮ হাজার ৭২৭ ছাত্রী। এর মধ্যে আটটি সাধারণ বোর্ডের অধীনে ১০ লাখ ৯২ হাজার ৬০৭ জন, মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে আলিমে এক লাখ ১২৭ জন, কারিগরি বোর্ডের অধীনে এইচএসসি বিএম-এ এক লাখ ১৭ হাজার ৭৫৪ জন এবং ডিআইবিএসে ৯৬৯ জন পরীক্ষা দেবে।
ঢাকার বাইরে এবার বিদেশের সাতটি কেন্দ্রে ২৯৯ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবে, এর মধ্যে ১৫৯ জন ছাত্র এবং ১৪০ জন ছাত্রী।
২০১৭ সালে মোট পরীক্ষার্থী সংখ্যা ছিল ১১ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৬ জন। ২০১৭ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে মোট পরীক্ষার্থী বেড়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার ৭৭১ জন, বৃদ্ধির হার ১০ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ৭৯টি এবং মোট কেন্দ্র বেড়েছে ৪৪টি।
এবার ২৮টি বিষয়ের ৫৪টি পত্রের পরীক্ষা সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা হবে। গত বছরও ৫৪টি পত্রে সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা হয়।
গত এসএসসির মতো এইচএসসিতেও পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষার কক্ষে আসন গ্রহণ করতে হবে। পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে লটারির মাধ্যমে নির্বাচন করা হবে পরীক্ষার প্রশ্নের সেট।
কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না। তবে কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছবি তোলা যায় না এমন মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবে।
এবারও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পালসিজনিত প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীরা শ্রুতিলেখক নিয়ে পরীক্ষা দিতে পারবে। এ ধরনের পরীক্ষার্থীরা অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় পাবে। আর অটিস্টিকসহ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীরা পাবেন অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময়। এ ধরনের শিক্ষার্থীরা অভিভাবক, শিক্ষক বা সাহায্যকারী নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে।
এদিকে, পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে পরীক্ষার্থী ছাড়া জনসাধারণের প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে নিষেধ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
এছাড়া পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ২৯ মার্চ থেকে দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনা অনুযায়ী, ২৯ মার্চ, বৃহস্পতিবার থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সব কোচিং সেন্টার। পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। ২৮ মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংবাদ সম্মেলনে এ সংক্রান্ত ঘোষণা দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
পাশাপাশ এইচএসসি পরীক্ষার সময় মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রমের ওপর বিশেষ নজরদারির নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম ডিপার্টমেন্ট থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার প্রকাশ করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, এমএফএস (মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস) হিসাবের মাধ্যমে সম্পাদিত লেনদেন কঠোর নজরদারির আওতায় রাখতে হবে। সব এমএফএস প্রোভাইডার স্ব-স্ব ডিস্ট্রিবিউটর অথবা সুপার এজেন্ট, এজেন্ট ও গ্রাহকদের এই নির্দেশনার বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন। এ ছাড়া এজেন্টদেরও যথাযথ নজরদারির আওতায় রাখবেন।
নির্দেশনায় আরো বলা হয়েছে, যে সব মোবাইল হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেন দেখা যাবে, সে সব লেনদেনকারীর তালিকা যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থায় পাঠাতে হবে। এ ছাড়া এমএফএস সংক্রান্ত অন্যান্য নির্দেশনা অপরিবর্তিত থাকবে।
(দ্য রিপোর্ট/এনটি/এপ্রিল ০২, ২০১৮)