করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করেছে ডিসিসিআই
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: আসছে বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণীর করমুক্ত আয়সীমা বাড়িয়ে ৩ লাখ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।
একইসঙ্গে সংগঠনটি আগামী বাজেটে সকল ক্ষেত্রে কর্পোরেট করহার ৫ শতাংশ কমানোসহ ২০টি সুপারিশ করেছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় রাজস্ব ভবনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় ডিসিসিআই সভাপতি আবুল কাশেম খান এসব প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। বর্তমানে ব্যক্তিশ্রেণীর করমূক্ত আয়সীমা আড়াই লাখ টাকা।
আবুল কাশেম খান নীট সম্পদের মূল্য ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত হলে শূন্য হারে সারচার্জ আরোপের পাশাপাশি ১৫ কোট টাকা পর্যন্ত ১০ শতাংশ হারে সারচার্জ নির্ধারণের আহবান জানান।
এছাড়া সংগঠনটির পক্ষ থেকে সামাজিক,আর্থিক ও অন্যান্য সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ট্যাক্স কার্ডধারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সুবিধা প্রদান এবং করদাতাদের কর প্রদানের হারের সাথে সঙ্গতি রেখে ছয়টি শ্রেণিতে ট্যাক্স কার্ড প্রবর্তনের প্রস্তাব করা হয়।
আবুল কাশেম খান বলেন,ট্যাক্স কমিয়ে দিলে সেই টাকা দিয়ে আমরা বাড়ি গাড়ি করব না। আপনারা যদি ট্যাক্স কমিয়ে দেন, ভবিষ্যতে আমরা সেই টাকা বিনিয়োগ করতে চাই। অনেক ক্ষেত্রে দেশের টাকা বাইরে চলে যাচ্ছে। বিনিয়োগের সুযোগ করে দিলে সেই টাকা হয়ত দেশেই থেকে যেত।
এর জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, কর কমিয়ে কিভাবে রাজস্ব আয় বাড়ানো যায় আমরা সেদিকে এবার নজর দিব। এখন পর্যন্ত কর্পোরেট কর কমানোর কথা অনেকেই বলেছেন। দীর্ঘমেয়াদে এটি কিভাবে কমানো যায় আমরা সেদিকে লক্ষ্য রাখব।
তিনি ব্যবসায়ীদের সময়মত শুল্ক ও ভ্যাট প্রদানের আহবান জানান। বলেন, অনেক সময় দেখা যায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ভ্যাট আহরণ করলেও তা সরকারের কোষাগারে জমা দিচ্ছেন না, এ বিষয়ে সকলকে সচেতন থাকার আহবান জানান তিনি।
এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, ট্যাক্স কার্ডধারীদের সচিবালয়ে প্রবেশ, বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্চ ব্যবহার, হাসপাতাল, বিমান, নৌ ও রেলপথের টিকেট বুকিং সহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থার সাথে আলোচনার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে উদ্যোগী হবেন।
তিনি বলেন, বিদ্যমান আয়কর রিটার্ন ফরমকে আরো সহজ করা হবে এবং শ্রীঘই এ বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করা হচ্ছে।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ভ্যাট আদায়ের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণের সাথে সাথে বর্তমান প্যাকেজ ভ্যাট বলবৎ রাখা এবং টার্নওভার করের সীমা ১ কোটি ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব করেন। তিনি উৎপাদানমুখী খাতে বিনিয়োগ, ক্যপিটাল মেশিনারিজ আমদানি এবং পুনঃবিনিয়োগে ব্যবহৃত অর্থ শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদানের আহবান জানান। এর মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে এবং অর্থনীতির চাকা গতিশীল থাকবে।
এছাড়া সংগঠনটির পক্ষ থেকে কোম্পানির করযোগ্য আয়ের ৫শতাংশ পর্যন্ত গবেষণা ও উন্নয়ন এবং ব্যবসায়ে এসডিজি খাতের কার্যক্রমে বিনিয়োগ করলে, আয় করমুক্ত ঘোষণা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়।
মঙ্গলবার ডিসিসিআই ছাড়াও আর্থিক প্রতিষ্ঠান-ব্যাংক, বীমা, লিজিং ও মার্চেন্ড ব্যাংক, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ, বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রি (বিসিআই) এবং এসএমই ফাউন্ডেশনের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনা হয়।
(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/এপ্রিল ০৩, ২০১৮)