দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বীর প্রতীক হামিদুল হক না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

বৃহস্পতিবার (৫ এপ্রিল) ভোর সোয়া ৪টায় রাজধানী মালিবাগে ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

মৃত্যুর সময় তিনি স্ত্রী রোমেচা বেগম এবং চার ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।

বীর প্রতীক হামিদুল হকের ছেলে ওবাইদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘বাবা ভোরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। সকালে আমরা বাবার মরদেহ নিয়ে বাড়ির পথে রওনা হয়েছি।’

এর আগে, গত ২৭ মার্চ ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে ভর্তি করা হয় হামিদুল হককে। তিনি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি ও ফুসফুসের বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। ভর্তির পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে গত ১ এপ্রিল আইসিইউতে স্থানান্তর করেন চিকিৎসকরা।

তিনি বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। ফুসফুসে সমস্যা থাকায় অক্সিজেন নিতে পারতেন না। আজ ভোরে হৃদযন্ত্র বিকল হলে তার মৃত্যু হয়।

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে স্থানীয় কচুয়া পাবলিক উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন হামিদুল হক। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ শুনতে ৫ মার্চ ভোরে ঢাকার পথে রওনা দেন তিনি। বাল্যবন্ধু ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবদুস সামাদের হলে গিয়ে ওঠেন তিনি। ৭ মার্চ ভোরে চলে যান রেসকোর্স ময়দানে (এখন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান)। ঐতিহাসিক সেই ভাষণে অনুপ্রাণিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন মুক্তিযুদ্ধে। যোগ দেন টাঙ্গাইলের কাদেরিয়া বাহিনীতে। কালিহাতীসহ বেশ কিছু স্থানে তিনি যুদ্ধ করেন। পাশাপাশি কাদেরিয়া বাহিনীর বেসামরিক বিভাগেরও গুরুত্বপূর্ণ কিছু দায়িত্ব পালন করেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।

মুক্তিযুদ্ধে সাহস ও বীরত্বের জন্য হামিদুল হককে বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিত করা হয়। ১৯৭৩ সালের সরকারি গেজেট অনুযায়ী তার বীরত্বভূষণ নম্বর ৪২২। তিনি ১৯৭২ ও ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে একাধিকবার দেখাও করেছেন।

১৯৯০ সালে সখীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন বীর প্রতীক হামিদুল হক। সখীপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের একটি ভাড়া বাসায় সপরিবারে থাকতেন তিনি।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/এপ্রিল ০৫, ২০১৮)