দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : কারওয়ান বাজারে বেপরোয়া দুই বাসের ঘেঁষাঘেঁষিতে ডান হাত হারানো তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীব হোসেনের অবস্থা শঙ্কামুক্ত নয়। ওই দুর্ঘটনায় তার ব্রেইনের সামনের অংশে রক্ত ও পানি জমে গেছে, মাথার সামনে ও পেছনের খুলিতেও আঘাত লেগেছে।

শুক্রবার (৬ এপ্রিল) ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের অর্থোপেডিকস বিভাগের প্রধান ডা. শামসুজ্জামান শাহীন গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

শামসুজ্জামান বলেন, দুর্ঘটনায় রাজীব হাত হারিয়েছেন। তার মাথায়ও আঘাত লেগেছে। ব্রেইনের সামনের অংশে রক্ত ও পানি জমে গেছে। মাথার সামনে ও পেছনের খুলিতেও আঘাত লেগেছে। তাই তার অবস্থা শঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছে না।

তিনি আরো বলেন, রাজীবকে হাই-কেয়ারের জন্য আইসিইউতে রাখা হয়েছে। তার অপারেশনের প্রয়োজন ছিল, কিন্তু আপাতত আমরা সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে যাচ্ছি না।

এর আগে বেলা ১১টার দিকে ঢামেক আইসিইউর ৩০ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন রাজীবকে দেখতে যান জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ ও পটুয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য এ এস এম ফিরোজ (এমপি)।

সাক্ষাৎ শেষে চিফ হুইপ সাংবাদিকদের বলেন, রাজীবের চিকিৎসায় সবধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ঢাকা মেডিকেল কর্তৃপক্ষ ও সরকার। তার এই করুণ অবস্থার জন্য যারা দায়ী, সেই অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার (৩ এপ্রিল) বিআরটিসির একটি দোতলা বাসের পেছনের ফটকে দাঁড়িয়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন মহাখালীর সরকারি তিতুমীর কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাজীব হোসেন। বাসটি হোটেল সোনারগাঁওয়ের বিপরীতে পান্থকুঞ্জ পার্কের সামনে পৌঁছালে হঠাৎ করে পেছন থেকে স্বজন পরিবহনের একটি বাস ওভারটেক করে।

সেসময় বিআরটিসির দোতলা বাসটির পেছনের ফটকে দাঁড়িয়ে থাকা রাজীবের ডান হাতটি বাইরের দিকে সামান্য বেরিয়ে ছিল। স্বজন পরিবহনের বাসটি বিআরটিসি বাসের গা ঘেঁষে পেরিয়ে যাওয়ার সময় রাজীবের হাতটি কাটা পড়ে। তাকে দ্রুত পান্থপথের শমরিতা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা চেষ্টা করেও বিচ্ছিন্ন হাতটি রাজীবের শরীরে আর জোড়া লাগাতে পারেননি। পরে তাকে বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।

ঢাকায় রাজীব হোসেন যাত্রাবাড়ীর মীর হাজিরবাগের একটি মেসে থাকতেন। কষ্টে পড়াশোনা চালাচ্ছিলেন স্বজনদের সহযোগিতায়। রাজীবের মা-বাবা অনেক আগেই মারা গেছেন। বাবা হেলালউদ্দীন। তিন ভাইয়ের মধ্যে রাজীব সবার বড়। বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফলের দাসপাড়ায়। রাজীব টিউশনি করতেন এবং চাচা, খালাসহ সবার সহযোগিতায় পড়াশোনা চালিয়ে নিচ্ছিলেন।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/এপ্রিল ০৬, ২০১৮)