দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক:
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এদের একটি অংশ সোমবার রাতে অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করেছেন। সরকারের আশ্বাস না মেনে এ অংশটি আগামীকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে আবার অবস্থান শুরু করবেন।

আন্দোলনকারীদের এ অংশের অভিযোগ, তাদের অবস্থানের আশপাশে ছাত্রলীগের নেতারা ঘোরাঘুরি করায় তারা নিরাপদ মনে করছেন না। তাই আন্দোলন আজকের মতো স্থগিত।

আরেকটি অংশ সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠক শেষে আগামী ৭ মে পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করছেন।

সরকারের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীদের একটি অংশ। সোমবার রাত শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল এবং বাংলা একাডেমি এলাকায় অবস্থান নিয়ে তারা স্লোগান দিতে থাকেন। এ তিন স্থানে হাজারো আন্দোলনকারী ছিলেন। কিন্তু রাত বাড়তে থাকার সঙ্গে সঙ্গে আন্দোলনকারীদের এ অংশের শিক্ষার্থীরা চলে যতে থাকেন। কমতে কমতে একপর্যায়ে সংখ্যা প্রায় ১০০-তে নেমে আসে।
এ সময় আন্দোলনকারীদের এ অংশের মুখপাত্র দাবি করে বিপাশা চৌধুরী নামের এক শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, আমাদের আশপাশে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ঘোরাঘুরি করছেন। নিরাপদ মনে না করে আজকের মতো আন্দোলন স্থগিত করা হলো।

বিপাশা চৌধুরী আরও বলেন, তারা আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। পরদিন ১৬ এপ্রিল ‘চল চল ঢাকা চল’ শিরোনামে কর্মসূচি পালন করবেন।

বিদ্যমান কোটার বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে, সরকারে এমন আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলন আগামী ৭ মে পর্যন্ত স্থগিত করেন আন্দোলনকারীরা। সোমবার বিকেলে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে সরকারের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সচিবালয়ে আন্দোলনকারীদের প্রায় পৌনে ২ ঘণ্টা বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠকের পর বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা সরকারের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ৭ মে পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করছেন। তিনি বলেন, সরকারের সঙ্গে বৈঠকে আজকের মধ্যে আন্দোলনের সময় গ্রেপ্তার হওয়া সবাইকে মুক্তি দেওয়া বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

পরে সন্ধ্যায় আন্দোলনকারীদের একটি অংশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেন। শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল এবং বাংলা একাডেমি এলাকায় পৃথকভাবে অবস্থান নিয়ে তারা সিদ্ধান্তকে ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। তারা বলেন, এ সিদ্ধান্ত তারা মানতে রাজি নন। কোটা সংস্কারে সুস্পষ্ট আশ্বাস না দিলে তাদের পক্ষে এ দাবি মানা সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কোন আশ্বাস না থাকায় তারা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।

আন্দোলনকারীদের এ অংশটি বলছে, অন্য ইস্যু সামনে চলে আসলে এই ইস্যু হারিয়ে যাবে। তবে পরে তারা আন্দোলন আগামীকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত স্থগিত করেন।

বিদ্যমান কোটার সংস্কার চেয়ে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এ দফায় গত ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে আন্দোলন করে আসছে। গত রোববার তাদের পদযাত্রা ও অবস্থা কর্মসূচি চলাকালে ঢাকায় পুলিশ বাধা দিলে সহিংস পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে।

টিআইএম/০৯ এপ্রিল,২০১৮