কোটা আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণার পর সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতারা আন্দোলন স্থগিত করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১২ এপ্রিল) সকালে ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. উজ্জ্বল মিয়া ও রাশেদ খান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
উজ্জ্বল মিয়া জানান, বুধবার সংসদে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা আসার পর রাতে বসে পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের প্রতি আস্থা রেখে আমরা আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিচ্ছি।
তিনি বলেন, পরে আমরা আনন্দ মিছিল করব। প্রধানমন্ত্রীর জন্য ফুল নিয়ে যাব। আর ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করব। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে শুধু একটাই অনুরোধ করব, কোনো মামলা দিয়ে আমাদের সাধারণ আন্দোলনকারীদের যেন হয়রানি করা না হয়।
এদিকে ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান গণমাধ্যমকে জানান, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমরা আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে সকাল ১০টার পর।
বুধবার (১১ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন।
কোটা বাতিলের দাবিতে গত রোববার থেকে বড় আকারে আন্দোলন শুরু হয়।
বুধবার শাহবাগ এবং ঢাকার অন্যত্র সরকারি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোটা বাতিলের দাবিতে সরব হয়। দেশের নানা জায়গায় সড়ক অবরোধ হয় এ দাবিতে। ঢাকায় আন্দোলনকারীরা কোটা বাতিলে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা দাবি করেন। দুপুর ১২টার দিকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জানান, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তারা দেখা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী সব ধরনের কোটা বাতিলের কথা বলেছেন।
বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে ইউনিভার্সিটিগুলোতে ক্লাস বন্ধ। পড়াশোনা বন্ধ। এরপর আবার ভিসির বাড়ি আক্রমণ। রাস্তাঘাটে যানজট। মানুষের কষ্ট। সাধারণ মানুষের কষ্ট। সাধারণ মানুষ বারবার কষ্ট পাবে কেন? এই বারবার কষ্ট বন্ধ করার জন্য, আর বারবার এই আন্দোলনের ঝামেলা মেটাবার জন্য কোটাপদ্ধতি বাতিল। পরিষ্কার কথা। আমি এটাই মনে করি, সেটা হলো বাতিল।’
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধীসহ অনগ্রসর শ্রেণির মানুষের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করার ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোটাপদ্ধতিরই দরকার নেই। যারা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী, তাদের অন্যভাবে চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে পারব। এই আন্দোলন যারা করেছে, যথেষ্ট হয়েছে, এখন তারা ক্লাসে ফিরে যাক।’
(দ্য রিপোর্ট/এনটি/এপ্রিল ১২, ২০১৮)