দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: শেষ দুপুরে হঠাৎই শুরু হলো বৃষ্টি। প্রথমে গুড়ি গুড়ি পরে অঝোর ধারায়, আর তাতেই বাঙালির প্রাণের বৈশাখী উৎসব এলোমেলো হয়ে গেল। বৃষ্টিতে কেউ আনন্দ অবগাহন করেছেন,কেউ বা ছুটাছুটি করে নিকট আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটেছেন। তবে শেষ রক্ষা হয়নি অধিকাংশের।

 

বৃষ্টিতে আটকে পড়া মানুষ যেন বাসায় ফিরতে পারে সেজন্য কাকরাইল-মৎস্য ভবন-প্রেসক্লাব-পল্টন রুট যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। এই রুটে সকাল থেকে যান চলাচল বন্ধ ছিল।

এদিকে নববর্ষ উদযাপন করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, বাংলা একাডেমি, শাহবাগ, রমনা পার্ক, ধানমন্ডি, বনানী, উত্তরাসহ বিভিন্ন এলাকায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে বৃষ্টির কারণে দর্শনার্থীরা চলে যেতে দেখা গেছে। এছাড়া এসব অনুষ্ঠানকে ঘিরে রাস্তায় বসে থাকা বাহারি পণ্যের বিক্রেতাদেরকেও চলে যেতে দেখা গেছে।

স্ত্রীসহ টিএসসির দিকে হেঁটে যাচ্ছিলেন শিক্ষা কর্মকর্তা আরেফিন হাসান। বৃষ্টির জন্য আর এগুতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘ভাই আর আগাতে পারলাম না। পাঁচটার পর তো নাকি ঢুকতে দেবে না। সাড়ে ৪টা থেকে এখানে দাঁড়িয়ে বৃষ্টি থামার অপেক্ষা করছি। আর মনে হয় সম্ভব হবে না। আরেফিন হাসানের মতো অনেকে রাজধানীতে বৃষ্টির মধ্যে আটকা পড়েছেন।’

এদিকে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে শনিবার রাজধানীসহ দেশের অনেক এলাকায় দিনের যেকোনো সময় ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে। আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস জানান, বাতাসে প্রচুর আদ্রতা ছিল এবং একই সঙ্গে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছিল। তাই এই বৃষ্টি। এর আগে শুক্রবার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশে অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে রয়েছে। এর প্রভাবে দুই দিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে কালবৈশাখী ঝড় ও বৃষ্টি হচ্ছে। শুক্রবারও দেশের বেশিরভাগ এলাকায় বৃষ্টি হয়েছে।

শনিবার দুপুরের পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদফতরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, রংপুর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বজ্রপাতসহ বৃষ্টি হতে পারে। এর পাশপাশি আকাশ আংশিক মেঘাচ্ছন্ন থাকবে। শনিবার দুপুর ১২ টা পর্যন্ত বাতাসের আদ্রতা ছিল ৫৫ শতাংশ এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে গতরাতে আলপনা এঁকে বাংলা নতুন বর্ষ উদযাপনের ব্যবস্থা করা হয়। সকাল থেকে সেই আলপনাকে সামনে রেখে মানুষজন দলবেঁধে ছবি তোলেন। দুপুরে ফাঁকা রাস্তায় বসে ছবি তুলছেন অনেকে, রাস্তায় বাইক রেখে বন্ধুবান্ধব সদলবলে, আবার কেউ কেউ সপরিবারে ছবি তোলায় ব্যস্ত সময় কাটালেও বৃষ্টি নামার সঙ্গে সঙ্গে তাদের সব আনন্দই ভেস্তে গেছে।
এদিকে বৃষ্টিতে সন্ধ্যা নাগাদ রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তায় পানি জমে গেছে। ফলে পানিজটের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় যানজট। ক্রমশ: তা তীব্র আকার ধারণ করছে।