দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক:‘বাংলাদেশের সংসদ হচ্ছে দুনিয়ার একমাত্র সংসদ, যেখানে সংসদের স্পিকার, সংসদ নেতা ও উপনেতা এবং বিরোধীদলীয় নেতা সবাই নারী। আমাদের পুরুষ সদস্যরা খুবই উদার। বাংলাদেশের সংসদ হচ্ছে নারীর ক্ষমতায়নের প্রতীক’-এসব কথা বলেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার লন্ডনে কমনওয়েলথ হেডস অব গভর্নমেন্ট মিটিং (সিএইচওজিএম)-এ উইমেন্স ফোরামে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তিনি নারীর ক্ষমতায়নের প্রতীক হিসেবে দেশের সংসদে নারীদের শক্তিশালী উপস্থিতির বিষয়টি তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের সময় উপস্থিত ৫৩ জাতির কমনওয়েলথভুক্ত অন্য দেশগুলোর নেতারা করতালি দিয়ে তাকে স্বাগত জানান। সফরে লন্ডনের কুইন এলিজাবেথ টু সেন্টারে ‘এডুকেশন টু এমপাওয়ার’ শীর্ষক একটি অধিবেশনে ভাষণ দেন শেখ হাসিনা।

এতে তিনি মেয়েদের শিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কৃতিত্বের একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরেন। তিনি বলেছেন, ‘বিদ্যালয়ে নারী শিশুদের ভর্তির হওয়ার হার ছেলে শিশুদের ভর্তি হওয়ার হারকে ছাড়িয়ে গেছে এবং এখন আমাদের সামনে ছেলে শিশুদের বিদ্যালয়ে ফেরাবার মতো অভূতপূর্ব পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে।’

সংবিধানে নারী পুরুষের সমান অধিকারের বিষয়টি একটি মৌলিক অধিকার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করেন তিনি। সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করতে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বেতন মওকুফ করা, বিদ্যালয়ে প্রায় ২৮ লাখ ৪০ হাজার শিক্ষার্থীর একবেলা খাবারের ব্যবস্থা করা এবং ২০১৮ সাল পর্যন্ত প্রায় ৩৬ কোটি ২০ লাখ পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করার মতো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘উপযুক্ত শিক্ষা ছাড়া নারী উন্নয়ন সম্ভব নয়।’

তিনি বলেছেন, ‘জাতিসংঘের শর্ত পূরণ করে অনুন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়া আমাদের জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যগুলোর একটি হয়ে থাকবে সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করার বিষয়টি।’ কমনওয়েলথের অপর ৫২ সদস্যের সঙ্গে হাসিনাও বর্তমানে সিএইচওজিএমে যোগ দিতে যুক্তরাজ্যে রয়েছেন। বুধবার সন্ধ্যায় লন্ডনের স্কাই গার্ডেনে উপস্থিত নেতৃবৃন্দের সম্মানে আয়োজিত নৈশভোজে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের সঙ্গে দেখা হবে তার। এর পরের দিন বৃহস্পতিবার সরকার প্রধানদের নিয়ে কার্যকরী কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। পরের দিন শুক্রবার নেতৃবৃন্দের আবার দেখা হবে উইন্ডসরে।

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ চলাকালে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ সেন্টারের বাইরে কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে ‘শেখ হাসিনা ফিরে যাও’ স্লোগান দিতে এবং ‘খালেদা জিয়াকে মুক্তি দাও’ লেখা প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করতে দেখা গেছে। বিরোধী দলের ব্যবস্থাপনায় কয়েকটি গাড়িকে বিএনপি প্রধানের সমর্থনে লেখা বিভিন্ন ব্যানার নিয়ে শহরময় ঘুরে বেড়াতেও দেখা গেছে।‍

দ্য রিপোর্ট/টিআইএম/১৭ এপ্রিল,২০১৮