দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: সিরাজগঞ্জ, মাগুরা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নওগাঁয়, নোয়াখালী ও সুনামগঞ্জে বজ্রাঘাতে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এছাড়া আহত হয়েছেন পাঁচজন। রবিবার (২৯ এপ্রিল) এ ঘটনা ঘটে। জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের কাজিপুর, কামারখন্দে এবং শাহজাদপুরে বজ্রাঘাতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা জানায়, কাজিপুর উপজেলার তেকানী চরে রবিবার (২৯ এপ্রিল) সকালে সামছুল হক ও তার ছেলে আরফান (১৪) বাদাম ক্ষেতে কাজ করতে যায়। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে হঠাৎ প্রচণ্ড ঝড়ের সময় বজ্রাঘাতে কাজিপুরের ডিগ্রি তেকানী গ্রামের শামছুল মণ্ডল (৫৫) ও তার ছেলে আরমানের (১৪) ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়।

এদিকে কামারখন্দের বেলা সাড়ে ১০টার দিকে ধান কাটার সময় বজ্রাঘাতে আব্দুল কাদের (৩৭) নামে এক কৃষক নিহত হন।

অপরদিকে দুপুর ১টার সময় শাহজাদপুর উপজেলা ছয়আনি গ্রামের নাবিল (১৭) ও পলিন (১৫) আম কুড়াতে গিয়ে বজ্রাঘাতে নিহত হয়েছে। আহত হয় আরও চার জন। তাদের শাহজাদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. রাজিবুল ইসলাম সিদ্দিকি নিশ্চিত করেছেন।

মাগুরা: মাগুরা সদর উপজেলার অক্কুর পাড়া, রায়গ্রাম ও শালিখা উপজেলার বুনাগাতী গ্রামে রবিবার দুপুরে বজ্রাঘাতে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে।

সদর থানার এসআই আশরাফ হোসেন জানান, সদর উপজেলার অক্কুর পাড়ায় বজ্রাঘাতে নিহত ব্যাক্তির নাম শামীম হোসেন (৪০)। তিনি পেশায় ভ্যানচালক। বজ্রপাতের সময় তিনি ভ্যান চালিয়ে মাগুরা থেকে শ্রীপুরের দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে কামারবাড়ি এলাকায় তিনি বজ্রাঘাতের শিকার হন। সদরের রায়গ্রামে বজ্রঘাতে নিহত অপর ব্যক্তির নাম আলম মিয়া (৩৫)। তিনি সদর উপজেলার বুলু গ্রামের বাসিন্দা। মাগুরা শহর থেকে বাড়ি ফেরার সময় তিনি বজ্রাঘাতের শিকার হন।

অন্যদিকে শালিখার উপজেলার বুনাগাতী এলাকায় একটি মোবাইল টাওয়ারে কাজ করার সময় মেহেদী হোসেন (২৫) নামে এক যুবক বজ্রপাতের শিকার হন। তিনি জয়পুরহাট জেলার মনপুরা এলাকার বাসিন্দা। পরে তাকে মাগুরা সদর হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের দরুইন গ্রামের বাগানবাড়ি এলাকায় বজ্রাঘাতে আব্দুর রহিম (৫০) নামে এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। রবিবার সকাল ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আরও দুই শ্রমিক আহত হয়েছেন। তার মধ্যে একজনের নাম মো. বেলাল হোসেন। অপরজনের পরিচয় জানা যায়নি।

হতাহতদের বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার জামরুল এলাকায় বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ।

আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন জানান, আহত দুজনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। নিহতের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।

নওগাঁ: নওগাঁর সাপাহার উপজেলায় বজ্রাঘাতে সোনাভান (২২) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার রামাশ্রম গ্রামের রুবেল হোসেনের স্ত্রী। রবিবার (২৯ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

সাপাহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সামছুল আলম বলেন, ‘দুপুরে সোনাভান বাড়ির অঙ্গিনায় রান্না করছিল। এ সময় বজ্রাঘাতে তার মৃত্যু হয় । এছাড়া ওই সময় বাড়িতে থাকা তার স্বামীসহ আরও তিনজন আহত হয়। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে সাপাহার উপজেল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।

নওগাঁর পোরশা উপজেলায় মুক্তার হোসেন (১৪) নামে এক স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার দুপুর ৩ টার দিকে ঘটনাটি ঘটে। মুক্তার হোসেন উপজেলার বালিয়াচান্দা গ্রামের ফাইজ উদ্দিনের ছেলে। পোরশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম জানান, মুক্তার হোসেন বালিয়াচান্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। দুপুরে বাড়ির পাশের মাঠে গরু আনতে গেলে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তার মুত্যু হয়।

নোয়াখালী: নোয়াখালী পৌরসভার লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামে বজ্রপাতে নোয়াখালী জিলা স্কুলের দিবা-ক শাখার ৭ম শ্রেণির ছাত্র ইকবাল হাসনাত পিয়ালের (১৩) মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা ও মা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নোয়াখালী পৌরসভার ৩নম্বর ওয়ার্ডের বশিরার দোকানের পাশের একটি খেলার মাঠে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

পিয়াল নোয়াখালী পৌরসভার ৩নম্বর ওয়ার্ডের লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের সোহেল রানা জগলুর ও পারভিন আক্তারের বড় ছেলে।

সুধারাম থানার এসআই লিটন দাস জানান, লাশ উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামে বজ্রপাতে লিটন মিয়া (৩০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার সকাল ১০ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। কৃষক লিটন সৈয়দপুর গ্রামের শাহজাহান মিয়ার ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, লিটন সকালে বাড়ির পাশে হাওরে ধান কাটতে যান। এসময় বজ্রপাতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে তাকে সুনামগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/এপ্রিল ২৯, ২০১৮)