রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি: গুলিতে নিহত নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (এমএনলারমা) সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট শক্তিমান চাকমার শেষকৃত্যে যাওয়ার পথে গাড়িবহরে দুর্বৃত্তদের গুলিতে ছয়জন নিহত হয়েছেন।

নিহতরা হলেন- ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) আহ্বায়ক তপন জ্যোতি চাকমা বর্মা, যুব সমিতির কেন্দ্রীয় সদস্য তনয় চাকমা ও মহালছড়ি যুব সমিতির সভাপতি সুজন চাকমা। এছাড়া খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে মারা গেছেন সজীব চাকমা, সেতুলাল চাকমা ও টনক চাকমা।

এ ঘটনায় আহত হয়েছেন নয়জন। তারা খাগড়াছড়ি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নিহত ও আহতরা সবাই খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা।

শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে খাগড়াছড়ির মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর যাওয়ার পথে খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি সড়কের নানিয়ারচর উপজেলার বেতছড়ি ফরেস্ট টিলা এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।

ওই ঘটনার পর নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে দুর্বৃত্তদের গোলাগুলি হয় বলেও প্রত্যক্ষদর্শী এবং আহতরা জানান। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

জেএসএস (এমএন) গ্রুপ ওই হত্যাকাণ্ডের জন্য প্রসীতের ইউপিডিএফকে দায়ী করেছে।

গুলিবিদ্ধ জীবন্ত চাকমা (৩২) ও নিরু কুমার চাকমা (৪৫) বলেন, আমরা সবাই একটি মাইক্রোবাসে শক্তিমান চাকমার শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলাম। মাইক্রোবাসটি খাগড়াছড়ি সীমানা অতিক্রম করে রাঙ্গামাটির নানিয়াচর উপজেলার বেতছড়ি পৌঁছামাত্র সন্ত্রাসীরা গুলি চালায়।

‘সন্ত্রাসীরা প্রথমে ড্রাইভারকে গুলি করে। এতে মাইক্রোবাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। এরপর সন্ত্রাসীরা এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে শুরু করে।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত হন। আহত হন ১০ জন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা পৌঁছালে সন্ত্রাসীরা তাদের লক্ষ্য করেও গুলি চালায়। দু’পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েক রাউন্ড গোলাগুলি চলে। গুলিবিদ্ধদের খাগড়াছড়ি হাসপাতালে আনা হলে মাইক্রোবাস চালক মো. সচিবসহ আরও দুজন মারা যান।

খাগড়াছড়ি হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার নয়নময় ত্রিপুরা জানান, আহতদের মধ্যে চারজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (এমএন) নেতারা ওই ঘটনার জন্য ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) সভাপতি প্রসীত বিকাশ খীসা গ্রুপকে দায়ী করেছে।

বৃহস্পতিবার সকালে রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট শক্তিমান চাকমাকে দিনে গুলি করে হত্যা করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শক্তিমান চাকমা তার সরকারি বাসভবন থেকে স্থানীয় বাজারে যান। বাজার থেকে মোটরসাইকেলে করে উপজেলা পরিষদের সামনে আসেন। মোটরসাইকেল থেকে নামতেই গুলি করা হয় তাকে। ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।

পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শক্তিমান চাকমার লাশ উদ্ধার করে। ওই ঘটনায় তার সহকারী রুপম চাকমা (৩৫) আহত হন। এ হত্যাকাণ্ডের জন্য ইউপিডিএফ এর শীর্ষ নেতাদের দায়ী করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (এমএন লারমা)।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/মে ০৪, ২০১৮)