দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : ঘূর্ণিঝড় ও বর্ষাকালের বাংলাদেশে অবস্থারত রোহিঙ্গাদের সহায়তায় আরও ৮৩ লাখ ডলার আবেদন জানিয়েছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (ফাও)। খবর- ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বিজনেস ইনসাইডারের।

বাংলাদেশে ফাও’য়ের জরুরি সমন্বয়ক পিটার আগনিউ বলেন, ফাও যে বিষয়গুলো নিয়ে উদ্বিগ্ন তা হলো, যদি আমরা এখনই পরিবেশগত বিনিয়োগ করতে না পারি তাহলে পরিস্থিতির ওপর স্বল্প বা দীর্ঘ মেয়াদে প্রভাব পড়বে। আর এতে এই ব্যাপক মানবিক বিপর্যয় আরও খারাপ হবে।

কক্সবাজারে প্রায় ৯ লাখ শরণার্থী রয়েছে। তাদের সংখ্যা স্থানীয় জনগণের সংখ্যার প্রায় দ্বিগুন। এই শরণার্থীরা ইতোমধ্যে স্থানীয় লোকজনের প্রাকৃতিক সম্পদ, খাবার, জ্বালানি ও কাজের ওপর প্রভাব ফেলেছে। আগনিউ বলেন, ‘আমরা দেখছি এখানে খাদ্যমূল্য প্রতিদিনই বাড়ছে আর কাজের দৈনিক মজুরি ৬ ডলার থেকে ২ ডলারে নেমে গেছে। আর জ্বালানি কাঠ ও খাবারের প্রতিযোগিতা তীব্র হচ্ছে। স্থানীয় জনগণ আমাদের বলেছেন, এই পরিস্থিতি তাদের পরিবারের ওপর চাপ তৈরি করেছে।

ফাও সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, শরণার্থীদের রান্নার জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি কাঠের জন্য বন কাটার পরিমাণ বেড়েছে যা পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি করছে। এতে বৃষ্টি ও বন্যার সময় সেখানে প্রাণঘাতি ভূমি ধসের আশঙ্কা আরও বেড়েছে। আগনিউ বলেন, এখানে সবার জন্য পর্যাপ্ত কাজ ও সম্পদ নেই। মানুষের জীবিকা পুননির্মাণ ও ক্রমবর্ধমাণ সামাজিক দুশ্চিন্তা কমানোর জন্য আমাদের সুযোগ তৈরি করতে হবে। নইলে আমাদের বর্তমান সমস্যার সঙ্গে আরও নতুন সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে।

ঝুঁকিতে থাকা এসব মানুষের জীবিকা পুররুদ্ধার, বাসস্থান পুনর্নির্মাণ ও সামাজিক দুশ্চিন্তা দূর করতে পরিবেশগত পুনরুদ্ধার ও কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর জন্য দীর্ঘ মেয়াদি উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করে জাতিসংঘ সংস্থাটি। আর এসব কাজ করার জন্য তারা আরও ৮৩ লাখ ডলার অর্থ সহায়তা চেয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ফাও মোট ৯৮ লাখ ডলারের মধ্যে মাত্র ১৫ লাখ ডলার যোগাড় করতে পেরেছে। বর্তমান বছরে এই অর্থ যোগাড় করা খুবই জরুরি। অর্থ পেলে ফাও আক্রান্ত বনাঞ্চল পুনরুদ্ধার কাজ ও স্থানীয় অধিবাসীদের জন্য প্রশিক্ষণ, বীজ ও অন্যান্য সুবিধা অব্যাহত রাখতে পারবে।

শরণার্থী শিবিরগুলোত ফাও জাতিসংঘ অভিবাসন সংস্থা-আইওএম’র সঙ্গে অংশীদার হিসেবে কাজ করছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, স্থানীয় লোকজন তাদের খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে পারলে শুধু নিজেদের খাদ্য চাহিদাই মিটবে না, বরং এর মাধ্যমে তাদের অতিরিক্ত আয় নিশ্চিত করা যেতে পারে। সেগুলো শরণার্থীদের মধ্যে সরবরাহ করার জন্য সংগ্রহও করা যেতে পারে।

ঘুর্ণিঝড় ও বর্ষাকালে স্থানীয় জনগণের জন্য ফাও ইতোমধ্যে খাবার নিরাপদ রাখার কিটস বিতরণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ৬০ লিটার ওয়াটারপ্রুফ কন্টেইনার যা সহজেই খাবার, বীজ ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিরাপদ রাখা যায়। এছাড়াও তাদেরকে বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে যাতে তারা সব উৎপাদন করতে পারে ও পুষ্টিকর খাবার খেতে পারে।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/মে ০৫, ২০১৮)