দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মুসলিম রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে বিভিন্ন প্রস্তাবনা এসেছে।

রবিবার (৬ মে) সকালে সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিভিন্ন দেশ তাদের প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।

এরপর এসব প্রস্তাবনা নিয়ে বেলা ১১টা থেকে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেছেন ওআইসি’র সদস্য দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। বেলা দুইটার দিকে প্রস্তাবনার বিষয়ে বিস্তারিত ব্রিফিং দিবেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

সকালে সম্মেলনে তিনি আনুষ্ঠানিক বক্তব্যে বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রস্তাবনা এসেছে। সেগুলো নিয়ে আমরা ক্লোজডোর বৈঠক করব। সেখানকার সিদ্ধান্ত পরে জানানো হবে।’

প্রস্তাবনার বিষয়ে বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘সম্মেলনে দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা হয়। সেখানে গাম্বিয়া রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তার জন্য এডহক কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে। আর রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে যেসব এতিম আছে, তাদের দেখভালে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তাব করেছে সোডা।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন প্রস্তাবনাগুলোর ওপর আলোচনা হবে। এরপর সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।’

প্রায় ৩৫ বছর পর দ্বিতীয়বারের মত বাংলাদেশে দুই দিনব্যাপী ওআইসি’র পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এই সম্মেলন হচ্ছে। শনিবার সম্মেলন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সম্মেলন ভাষণে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়াতে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) প্রতি আহ্বান জানান তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) নিপীড়িত মানবতার পাশে দাঁড়ানোর জন্য নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। কাজেই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যখন জাতিগত নির্মূলের মুখোমুখি, ওআইসি তখন নিশ্চুপ থাকতে পারে না।’

সম্মেলনে ৫৭ সদস্য বিশিষ্ট এই সংস্থার ৪০ জন মন্ত্রী ও সহকারী মন্ত্রীসহ প্রায় সাড়ে ৫শ’ প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন।

উল্লেখ্য, গতবছরের আগস্টে রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনী অভিযান চালালে প্রাণ বাঁচাতে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।

জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পশ্চিমা দেশগুলো সেনাবাহিনীর এই অভিযানে ‘জাতিগত নিধন’ ও ‘গণহত্যা’ অভিযোগ আনে। তবে বরাবর এই অভিযোগ অস্বীকার করছে মিয়ানমার।

ইতোমধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ সরকার।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/মে ০৬, ২০১৮)