বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস আজ
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস মঙ্গলবার (৮ মে)। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, ‘বিয়ের আগে পরীক্ষা করলে রক্ত, সন্তান থাকবে থ্যালাসেমিয়া মুক্ত’।
থ্যালাসেমিয়া রক্তের এমনই একটি রোগ যা দেহে হিমোগ্লোবিনের অস্বাভাবিকতা তৈরি করে। এই রোগের ফলে লোহিত রক্ত কোষ ধ্বংস করে দেয়, যা অ্যানিমিয়ার দিকে নিয়ে যায়।
থ্যালাসেমিয়া জিনগত রক্তরোগ যা উত্তরাধিকার সূত্রে পিতা-মাতার কাছ থেকে শিশুরা পেয়ে থাকে। এই ধরনের রোগ নিয়ে শিশুদের জন্ম নেওয়া প্রতিরোধে বিশেষজ্ঞরা বিয়ের আগে পুরুষ ও নারীর রক্ত পরীক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছেন। এ কারণে এবছর প্রতিপাদ্যে বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা আয়োজনে দিবসটি আজ পালন করা হচ্ছে।
দিবসটি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ রোগ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশন ও অন্যান্য সংস্থা দেশব্যাপী ১০ জানুয়ারি ‘থ্যালাসিমিয়া সচেতনতা দিবস’ হিসেবে পালন করেছে। সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি বিদ্যমান রোগীর জন্য সরকার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করে যাচ্ছে।’
গবেষণা প্রতিষ্ঠান ল্যাব ওয়ান ফাউন্ডেশন অব থ্যালাসেমিয়ার তথ্য মতে, দেশের ১০ ভাগ মানুষ থ্যালাসেমিয়ার জিন বহন করছে। এর মধ্যে চার শতাংশই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত। বেঁচে থাকার জন্য এদের নিয়মিত রক্ত নিতে হচ্ছে। দেশে বছরে সাড়ে সাত হাজার শিশু থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্ম গ্রহণ করে। সে হিসেবে দিনে ২০ জনের বেশি শিশু থ্যালাসেমিয়া রোগ নিয়ে পৃথিবীতে আসছে। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৩০ হাজারেরও বেশি শিশু এ রোগে ভুগছে।
অপরদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বে থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক প্রায় ২৫০ মিলিয়ন। বাংলাদেশে প্রায় ১০ থেকে ১২ শতাংশ মানুষ থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক। বিশ্বে প্রতি বছর এক লাখ শিশু থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্মগ্রহণ করে।
বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশনের মহাসচিব ডা. এম. আবদুর রহমান বলেন, ‘থ্যালাসেমিয়া ক্রনিক রোগ। এর সম্ভাব্য উদ্ভবের উপসর্গগুলো খুঁজে বের করার জন্য পুরুষ ও নারী উভয়েরই বিয়ের আগে একটি বিস্তারিত রক্ত পরীক্ষা করা উচিত।’
ডা. রহিম বলেন, ‘যখন একজন ব্যক্তি পিতা-মাতা উভয়ের কাছ থেকেই একটি করে থ্যালাসেমিয়া জিন উত্তরাধিকার হিসেবে পায়, তখন তাকে ‘থ্যালাসেমিয়া মেজর’ বলে। পিতা-মাতা উভয়েরই ‘থ্যালাসেমিয়া মাইনর’ থাকতে পারে, সেক্ষেত্রে তাদের সন্তানের ‘থ্যালাসেমিয়া মেজর’ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ২৫ শতাংশ।’
ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মঞ্জুর হোসেন বলেন, ‘যদি আমরা আমাদের দেশে এন্টি-নাটাল পরীক্ষা চালু করতে পারি, সেক্ষেত্রে আমরা থ্যালাসেমিয়া পজিটিভ শিশু জন্ম হার কমাতে পারি।’
চিকিৎসকেরা থ্যালাসেমিয়া নিয়ে শিশুর জন্ম দেওয়া থেকে দূরে থাকতে আন্তঃপারিবারিক বিয়ে এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
(দ্য রিপোর্ট/এনটি/মে ০৮, ২০১৮)