দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার লক্ষ্যে যে আইনি পরামর্শক নিয়োগ দিয়েছে বিএনপি, সেই ব্রিটিশ আইনজীবী লর্ড অ্যালেক্স কার্লাইলকে সরকার বাংলাদেশে আসতে বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ এসেছে।

দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসনের জামিন প্রশ্নে আপিল বিভাগে মঙ্গলবার শুনানি চলার মধ্যে নয়া পল্টনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার লিগ্যাল টিমের নতুন সদস্য ব্রিটিশ আইনজীবী কার্লাইলকে বাংলাদেশে আসতে বাধা দেওয়া হয়েছে।’

‘আজ আপিল বিভাগের শুনানিতে দেশনেত্রীর ডিফেন্স টিমে অংশগ্রহণ করতে তিনি গত কয়েক সপ্তাহ আগে লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে ভিসার জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তাকে হাইকমিশন ‘হ্যাঁ’ও বলেনি, ‘না’ও বলেনি।

এটাতে স্পষ্ট, সরকার প্রত্যক্ষভাবে বেআইনিভাবে আইনজীবী লর্ড কার্লাইলকে বাংলাদেশে ঢুকতে বাধা দিচ্ছে। বেগম খালেদা জিয়া যে শক্তিশালী লিগ্যাল টিম আছে, তা যাতে আরও শক্তিশালী না হয়, সেটাকে বাধাগ্রস্ত করতেই তাকে বেআইনিভাবে ভিসা দেওয়া হয়নি বলে আমরা মনে করি।’

রিজভী বলেন, ‘আজকে লর্ড কার্লাইলকে ভিসা দেওয়া হল না, অথচ এক-এগারোর সময়ে আজকের প্রধানমন্ত্রী যখন জেলে ছিলেন, তখন তিনি কানাডার একজন আইনজীবী পায়াম আখাভান ও ব্রিটেনের একজন আইনজীবী শেরি ব্লেয়ারকে নিয়োগ দিয়ে বাংলাদেশে নিয়ে এসেছিলেন।’

জিয়া এতিমখানা দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজা নিয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দি খালেদা জিয়া। হাই কোর্টে আপিলের পর তার জামিন হলেও আপিল বিভাগে তা আটকে গেছে। মঙ্গলবারের পর বুধবারও শুনানি হবে আপিল বিভাগে।

খালেদা বন্দি হওয়ার পর তার আইনি পরামর্শক হিসেবে ব্রিটিশ আইনজীবী কার্লাইলকে নিয়োগ দেয় বিএনপি, যাকে ‘জামায়াতের লবিস্ট’ বলছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা।

কার্লাইল রবিবার আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আইনের মানদণ্ডে নয়, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থেকে খালেদা জিয়ার সাজার এই রায় হয়েছে।

রিজভী বলেন, ‘আমরা যে বার বার বলে এসেছি, প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে দেশনেত্রীর বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়েছে এবং তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে। লর্ড কার্লাইলের বক্তব্যে এটা স্পষ্ট হয়েছে।’

‘কারণ ব্রিটিশ এই আইনজীবী বলেছেন, নিম্ন আদালত যে অভিযোগে বেগম খালেদা জিয়াকে সোপর্দ করা হয়েছে, যে বিষয়ে তাকে অভিযুক্ত করার কিছু নেই, সাজা দেওয়া দূরে থাক।’

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিএনপি চেয়ারপারসন ‘ন্যায়বিচার’ পাবে বলে আশা করেছেন রিজভী।

তিনি বলেন, ‘সর্বোচ্চ আদালতে জামিনের শুনানি চলছে। আমরা আশা করব যে, বিচার বিভাগ সাংবিধানিকভাবে সম্পূর্ণ স্বাধীন। সেখান থেকে আমরা ন্যায় বিচার পাব।’

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/মে ০৮, ২০১৮)