শ্বাসকষ্টে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা
ডা. মো. শাহিনুর রহমান: মানবদেহে হাঁপানি শ্বাসতন্ত্রের ক্রনিক প্রদাহ জনিত ও ক্ষুদ্র শ্বাসনালীর রোগ। এ ক্ষুদ্র শ্বাসনালীগুলো সর্বদা প্রদাহজনিত কারণে লাল এবং সংবেদনশীল থাকে।
এ সংবেদনশীল ক্ষুদ্র শ্বাসনালীগুলো যদি ঠাণ্ডা, ভাইরাস জীবাণু অথবা হাঁপানি উদ্দীপক অন্য কোন বস্তুর সংস্পর্শে আসে তখন সেগুলোতে প্রতিক্রিয়া জনিত সংকোচন ঘটে ফলে শ্বাস নালী সংকীর্ণ হয়ে শ্বাস-প্রশ্বাসে বাধা সৃষ্টি হয় এবং রোগীর শ্বাসকষ্ট হয়।
শ্বাস কষ্টের কারণ: প্রচলিত চিকিৎসা মতে– অনেক সময় সুনির্দিষ্ট কারণ জানা যায় না। হোমিওপ্যাথি মতে- সোরা ও সাইকোসিস উপবিশ এর প্রধান কারণ। যেমন কারো গনোরিয়া বা চর্ম রোগ ওয়েনমেন্ট দিয়ে বা বিসদৃশ পন্থায় বিতাড়িত করার পরে এ রোগটি ফুসফুসে আক্রমণ করলে রোগের নাম হয় হাঁপানি, লিভারে আক্রমণ করলে এর নাম হয় লিভার সিরোসিস, কিডনিতে আক্রমণ করলে এর নাম হয় নেফরোসিস। হোমিওপ্যাথি মতে- গনোরিয়া বা চর্ম রোগ ওয়েনমেন্ট দিয়ে বা বিসদৃশ পন্থায় বিতাড়িত করার কুফল বংশানুক্রমিক বিস্তার লাভ করে। এলার্জির কারণে হাঁপানি হতে পারে। ধূলা, বালি, ফুলের রেণু, পশুপাখির লোম, পালক, বিভিন্ন ধরনের খাদ্য যেমন – ইলিশ মাছ, গরুর মাংস, বেগুন, ডিম ইত্যাদিতে যদি কারো এলার্জি থাকে তবে এগুলোর সংস্পর্শে এলে বা খেলে হাঁপানি হতে পারে। কম্বল, কার্পেট, লোম দিয়ে তৈরি পোশাক অনেক সময় শ্বাসকষ্টের কারণ হতে পারে। বংশগত- যদি কারো বংশে হাঁপানির ইতিহাস থাকে তবে তার হাঁপানি হতে পারে। শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ- ধূমপান করলে হাঁপানি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
শ্বাস কষ্টের লক্ষণ: হাঁপানি রোগের প্রধান লক্ষণ হলো অল্পক্ষণ স্থায়ী শ্বাস কষ্ট। শ্বাস টেনে ভেতরে নেয়ার চেয়ে নিশ্বাস ফেলবার সময় কষ্ট বেশি হয়। বুকের ভেতর চাপ অনুভূত হয়। রোগী শুয়ে থাকতে পারে না, বসে সামনের দিকে ঝুঁকে শ্বাস নেয়। শ্বাস কষ্ট যে কোন সময় হতে পারে। তবে রাতের দিকে বিশেষ করে শেষ রাতে বেশি হয়। শ্বাস কষ্ট কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। বুকের ভেতরে শোঁ শোঁ শব্দ শোনা যায়। স্টেথোস্কোপ বুকের উপর বসিয়ে সুস্পষ্টভাবে এই শব্দ শোনা যায়। তীব্র সংক্রামণ হলে স্টেথোস্কোপ ছাড়াই শোনা যায়। নিঃশ্বাসের সময় শব্দ বেশী হয়।ঘাড়ের দুপাশে মাংসপেশি নিঃশ্বাসের সাথে ফুলে ফুলে উঠে। বুকের খাঁচার মাংসপেশিগুলো ভেতরের দিকে ঢুকে যায়।
যাদের দীর্ঘদিন ধরে এই রোগ থাকে তাদের বুকের খাঁচার আকৃতি অনেকটা ব্যারেলের মতো হয়ে যায়। অর্থাৎ দুপাশ চাপা, গোলাকার হয়ে উঠে। কাশি থাকে এবং তার সাথে সাদা বা হলুদ কফ থাকতে পারে।
প্রতিরোধ:
রোগীর অভিজ্ঞতা অনুসারে যে যে কারণে (আবহাওয়া, বিশেষ খাদ্য ও পানিয়, গোসল ও পরিবেশ ইত্যাদি) হাঁপানির টান বেড়ে যায় তা থেকে রোগীকে দূরে থাকতে হবে। ধূমপান এবং সব রকমের ধোয়া থেকে রোগীর দূরে থাকা প্রয়োজন ।কম্বল, কার্পেট, লোমশ পোশাক, ঘর ঝাড়া, কুকুর, বিড়াল, খরগোস ইত্যাদির মাধ্যমে হাঁপানির সংক্রমণ ঘটতে পারে তাই এগুলো থেকে দূরে থাকতে হবে। প্রয়োজন হলে ভালো হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
শেখ বদরুদ্দীন হোমিও চেম্বার
ডা. মো. শাহিনুর রহমান
ডি, এইচ, এম, এস-ঢাকা-রেজিস্ট্রেশন নম্বর-৪২৩২
৪২ ঢালকানগর লেন গেণ্ডারিয়া ঢাকা-১২০৪
মোবাইল নম্বর- ০১৭১১-১৩৮১৩৫
(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/মে ১২, ২০১৮)