ডেসটিনি বিলুপ্তে হাইকোর্টের রুল জারি
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেড (ডিটুকে) কোম্পানি কেন বিলুপ্ত (অবসায়ন) করার নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠানে বিলম্ব (দেরি) মার্জনা চেয়ে এবং সাধারণ সভা করা-সংক্রান্ত এক আবেদনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি এম আর হাসানের একক বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে ডেসটিনির ছিলেন আইনজীবী এ বি এম সিদ্দিকুর রহমান খান ও মাইনুল ইসলাম। জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ কে এম বদরুদ্দোজা।
জানা গেছে, মামলার কারণে কোম্পানির ব্যাংক হিসাব জব্দ রয়েছে। সম্পত্তিও জব্দ করা হয়েছে। এ অবস্থায় দৃশ্যত কোম্পানিটি ছয় বছর ধরে চলছে না।
তাই এজিএম করতে বিলম্ব মার্জনা চেয়ে ডেসটিনির করা আবেদনটি কেন অবসায়ন আবেদন হিসেবে রূপান্তরিত হবে না এবং ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডকে কেন অবসায়নের আদেশ দেয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়।
জয়েন্ট স্টক কোম্পানি ও ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালত বলছেন, কোম্পানির সাত পরিচালকের মধ্যে ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ দুজন কারাগারে আছেন। অপর চার পরিচালক পলাতক রয়েছেন। দুদকের করা মামলা তদন্তাধীন অবস্থায় কোম্পানির কোনো কাজে সম্পৃক্ত থাকবেন না শর্তে এক পরিচালক জামিনে আছেন।
পরে আইনজীবী বদরুদ্দোজা জানান, ২০০০ সালের ১৪ ডিসেম্বর রেজিস্টার্ড হওয়া কোম্পানিটি ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বার্ষিক সাধারণ সভা বিলম্বের মার্জনা চেয়ে কোম্পানির পরিচালক লে. জে. এম হারুন-অর-রশীদ ও পাঁচ শেয়ার হোল্ডার হাইকোর্ট আবেদন করেছেন।
হারুন-অর-রশীদ ছাড়া বাকি পাঁচজন হলেন- কাজী মোহাম্মদ আশরাফুল হক, মো. সাইফুল আলম রতন, সিরাজুম মুনীর, মো. জাকির হোসেন এবং বিপ্লব বিকাশ শীল। আবেদনে বিবাদী করা হয়েছে জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসের রেজিস্টার ও ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডকে।
এ কে এম বদরুদ্দোজা বলেন, আইন অনুসারে প্রতি ইংরেজি পঞ্জিকা-বছরে বার্ষিক সাধারণ সভা করতে হয়। এতে ব্যর্থ হলে কোম্পানির যে কোনো সদস্যের আবেদনক্রমে আদালত ওই কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভা আহ্বান করতে অথবা আহ্বান করার নির্দেশ দিতে পারে। আদালত ওই সভা আহ্বান অনুষ্ঠান ও পরিচালনায় যেরূপ সমীচীন বলে বিবেচনা করবে সেরূপ অনুবর্তী আনুষংগিক ও আদেশ প্রদান করতে পারবে৷
এ আইন অনুসারে তারা হাইকোর্টে আবেদন করেন। কিন্তু যে ছয়জন আবেদন করেছেন, তাদের মধ্যে ডেসটিনির সভাপতি ও সাবেক সেনা প্রধান হারুন-অর-রশীদ শর্ত সাপেক্ষে জামিনে রয়েছেন। জামিনের শর্ত ছিল তদন্ত পর্যন্ত তিনি এ কোম্পানির কোনো কার্যক্রমের সঙ্গে কোনো রকম সম্পর্ক রাখবেন না।
আবেদনে তদন্ত শেষ হয়েছে কি-না সে বিষয়ে কিছু বলা নেই। ফলে তিনি আবেদন করতে পারেন কি-না তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। এছাড়া এজিএমের আবেদনে উল্লেখ আছে ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত কোম্পানির কোনো অডিট নেই। অডিট রিপোর্ট না থাকলে বার্ষিক সাধারণ সভা কিভাবে হবে?
তিনি আরও জানান, আবেদনে তারা বলেছে দুদকের মামলায় সমস্ত সম্পদ জব্দকৃত। এবং সে সম্পদ তত্ত্বাবধানে তত্ত্বাবধায়কও নিয়োজিত আছেন। ফলে কার্যত কোম্পানি হিসেবে এর কোনো কর্মকাণ্ড নেই। এ ছাড়া সাত পরিচালকের মধ্যে ২০১২ সালের অক্টোবর থেকে কোম্পানির পরিচালক রফিকুল আমীন ও মোহাম্মদ হোসেন জেলে আছেন। চারজন পলাতক। এছাড়া তদন্ত চলাকালে অপর পরিচালক হারুন-অর-রশীদ এ কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করবেন না এমন শর্তে হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন। দুদকের কারণে ছয় বছর ধরে কোম্পানির কার্যক্রম প্রায় বন্ধ। এখন পরিচালক ছাড়া এজিএম হবে কিভাবে?
এ কারণে আদালত এজিএমের বিষয়ে আদেশ না দিয়ে কোম্পানিটি অবসায়ন করতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের প্রতি শোকজ নোটিশ জারি করেছেন বলে জানান তিনি। আদালত ৪ জুলাই পরবর্তী আদেশের জন্য দিন নির্ধারণ করেছেন।
(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/মে ১৫, ২০১৮)