রাজীবের ক্ষতিপূরণ আদেশ কাল
কারো ওপর অবিচার করব না : আপিল বিভাগ
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : রাজীব হোসেনের পরিবারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি) ও স্বজন পরিবহনের মালিককে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত চেয়ে করা আবেদনের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আদেশের জন্য মঙ্গলবার (২২ মে) দিন নির্ধারণ করেছেন আপিল বিভাগ।
সোমবার (২১ মে) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে বাস মালিকদেরে পক্ষে আইনজীবী ছিলেন আবদুল মতিন খসরু ও এবিএম বায়েজীদ। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার মুনীরুজ্জামান। রাজীবের পরিবারের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
শুনানি শেষে আদালত বলেছেন,এ সময় আদালত বলেন, ‘আমরা কারো ওপর অবিচার করব না। তবে হাইকোর্টের আদেশ কিছুটা সংশোধন করব।’
গত ৮ মে বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ রাজীবের দুই ভাইকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনের মালিককে নির্দেশ দেন।
এর মধ্যে ২৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ এক মাসের মধ্যে দিতে বলা হয় দুই বাস কর্তৃপক্ষকে।
কিন্তু বিআরটিসি ২৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় ১০ মে আপিল আবেদন করে। ১৩ মে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে আবেদনটি ১৭ মে শুনানির জন্য পাঠান।
সে অনুসারে ১৭ মে বৃহস্পতিবার আবেদনটি শুনানির জন্য বিআরটিসির পাশাপাশি স্বজন পরিবহনের পক্ষে আইনজীবী হাজির হন। এরপর আদালত আদেশের জন্য ২১ মে দিন ঠিক করেন। কিন্তু সোমবার আদালতে বাস মালিকপক্ষের আইনজীবীরা শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত আদেশের জন্য মঙ্গলবার দিন ঠিক করেন।
৮ মে হাইকোর্ট রাজীবের খালা জাহানারা পারভীন ও রাজীবের গ্রামের সাবেক চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদের ছেলে কাস্টমস কর্মকর্তা ওমর ফারুকের নামে সোনালী ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় একটি যৌথ হিসাব খোলার নির্দেশ দিয়েছেন।
ওই হিসাবে এক মাসের মধ্যে দুই বাস কর্তৃপক্ষ ২৫ লাখ করে মোট ৫০ লাখ টাকা জমা দেবেন। টাকা জমা দেওয়ার পর আগামী ২৫ জুনের মধ্যে আদালতকে দুই কর্তৃপক্ষ লিখিতভাবে বিষয়টি জানাবেন।
২৫ জুন এ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। ওইদিন বাকি ৫০ লাখ টাকা দেওয়ার বিষয়ে নির্দেশ আসতে পারে বলেও জানান ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
গত ৩ এপ্রিল রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকায় দুই বাসের রেষারেষিতে হাত কাটা পড়ে কলেজছাত্র রাজীবের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর ৪ এপ্রিল রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
হাইকোর্ট এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের রুল জারিসহ রাজীবের চিকিৎসার খরচ দুই বাস মালিক বিআরটিসি এবং স্বজন পরিবহনকে বহনের নির্দেশ দেন। রুলে তাকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে এক কোটি টাকা দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, সাধারণ যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিদ্যমান আইন কঠোরভাবে কার্যকর করতে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না এবং প্রয়োজনে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে আইন সংশোধন বা নতুন করে বিধিমালা প্রণয়নের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চান হাইকোর্ট।
এ রুল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় গত ১৬ এপ্রিল দিনগত রাত ১২টা ৪০ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজীবের মৃত্যু হয়।
৬ মে বিষয়টি আদালতকে জানান আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। এরপর আদালত অন্তর্বর্তীকালীন রাজীবের দুই ভাইয়ের ক্ষতিপূরণের জন্য এ আদেশ দেন।
(দ্য রিপোর্ট/এনটি/মে ২১, ২০১৮)