সাতকানিয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় বাদী পালিয়ে বেড়াচ্ছেন
বিশেষ প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় মানহানি মামলা দায়ের করায় মামলার বাদীকে প্রাণনাশের হুমকি প্রদানের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে একই ইউনিয়নের আবদুছ ছোবহান মানহানি মামলা দায়ের করেন।
জানা যায়, ২৮-১১-২০১২ইং সালে একই ইউনিয়নের জনৈক মনির আহমদ ও আবদুর রহিম গং ৩৭ শতক জায়গা মধ্যম এওচিয়া দেওদীঘি এলাকার মোহাম্মদ আইয়ুব আলীর কাছে বিক্রি করেন। জমি বিক্রেতা মনির আহমদ ও আবদুর রহিম সম্পর্কে চাচা-ভাতিজা। জমি বিক্রির বছর পার হয়ে যাওয়ার পর বিক্রীত টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে চাচা-ভাতিজার মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। বিরোধের এক পর্যায়ে মনির আহমদ বাদী হয়ে জমি ক্রেতা আইয়ুব আলী ও ভাতিজা আবদুর রহিমকে বিবাদী করে গত ২৩-১১-২০১৩ইং এওচিয়া ইউপি গ্রাম্য আদালতে মামলা দায়ের করেন। গ্রাম্য আদালতের বিচারক ইউপি চেয়ারম্যান মামলার পরিপ্রেক্ষিতে উভয়পক্ষকে মামলাসংক্রান্ত দলিলপত্রাদি ও সালিশি প্রতিনিধি সহকারে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে উপস্থিত হওয়ার জন্য নোটিশ প্রদান করেন। নির্ধারিত তারিখে যথাযথভাবে বাদী-বিবাদী গ্রাম্য আদালতে হাজির হয়। বিবাদী আবদুর রহিমের সালিশি প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত থাকে আবদুল ছোবহান।
সালিশি বৈঠকের বিচারক ইউপি চেয়ারম্যান বিবাদীকে কোনো জিজ্ঞাসাবাদ, জেরা, চুক্তিতর্ক উপস্থাপন ব্যতিরেকে কোনো ধরনের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে বিবাদীর ওপর পাঁচ লাখ টাকা ফেরত প্রদানের রায় চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় বিবাদীর সালিশি প্রতিনিধি আবদুছ ছোবহান প্রতিবাদ জানালে চেয়ারম্যান ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা বিবাদীর সালিশি প্রতিনিধি আবুদছ ছোবহানকে বেঁধে রেখে নাজেহাল করে। এ ঘটনায় আবদুল ছোবহান চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে মানহানি মামলা (মামলা নং-২৬/১৪ তাং-২৭/১/১৪ইং) দায়ের করেন। মামলা দায়ের করলে চেয়ারম্যান ছোবহানের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করতে থাকেন।
চেয়ারম্যান এলাকার প্রভাবশালী হওয়ার কারণে জীবনের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে চারজনকে আসামি করে ছোবহান সাতকানিয়া থানায় একটি জিডি করে (জিডি নং-৫৭২ তাং-১২/২/১৪ইং)।
উল্লেখ্য, এওচিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক চৌধুরী র্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত জামায়াতের দুর্ধর্ষ ক্যাডার আহমুদুল হক চৌধুরী ওরফে আহামুদ্যার বড় ভাই। বর্তমানে ছোবহান চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান। তিনি এখন চেয়ারম্যান ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের ভয়ে পালিয়ে বেরাচ্ছেন।
এদিকে ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে বিচারাধীন মামলার বিবাদী আবদুর রহিম জানান, ছোবহানকে বেঁধে রেখে আমাকে চেয়ারম্যানের বাড়ির দোতলায় তুলে জোর করে একটি সাদা প্যাডে স্বাক্ষর নেন চেয়ারম্যান ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা।
এ ব্যাপারে এওচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ছোবহান আমার কোনো শত্রু নয়, তিনি আমার বৈঠকে সালিশি প্রতিনিধি। তাকে বেঁধে অপদস্থ করব কেন? অবশ্য তার দায়ের করা মামলা রিপোর্টে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।
(দ্য রিপোর্ট/কেএইচ/এএস/আরকে/মার্চ ০৩, ২০১৪)