ষষ্ঠ দফায় বেসিকের বাচ্চুকে দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় অভিযোগের মুখে থাকা বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুকে ষষ্ঠ দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।
বুধবার (৩০ মে) সকাল ১০টার দিকে কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে তিনি হাজির হন।
দুদক সূত্রে জানা যায়, বেসিক ব্যাংকের সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের পক্ষ থেকে ৬১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় আবদুল হাই বাচ্চুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হচ্ছে।
তবে কোনো মামলায় তাকে আসামি করা হয়নি। এর আগে ২০১৭ সালের ৪ ও ৬ ডিসেম্বর, ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি, ৮ মার্চ, ৪ এপ্রিল, ও ৭ মে আব্দুল হাই বাচ্চুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়।
অভিযোগ, বেসিক ব্যাংকের ঋণ গ্রহীতাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের কমিশন নিয়েছেন বাচ্চু ও তার পরিবারের সদস্যরা। কমিশনের অর্থ ব্যাংক হিসাবে লেনদেন করেছেন তারা। এমন একটি অভিযোগের ভিত্তিতে গত ডিসেম্বরে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।
দুদক সূত্র জানায়, বাচ্চু বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান থাকাকালে নিজের স্ত্রী শেখ শিরিন আখতার, পুত্র শেখ সাবিদ হাই অনিক ও মেয়ে শেখ রাফা হাইকে সঙ্গে নিয়ে ইডেন ফিশারিজ লিমিটেড নামের একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠান খোলেন। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে এ প্রতিষ্ঠানের নামে খোলা হিসাবে মাত্র ১১ মাসেই জমা হয় ১৩ কোটি টাকার বেশি। আবার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে দেয়া ঋণের কমিশনের টাকা সরাসরি জমা হয়েছে বাচ্চু ও তার ভাই শাহরিয়ার পান্নার ব্যাংক হিসাবে।
২০১২ ও ২০১৩ সালে কয়েক মাসের ব্যবধানে দুজনে মিলে ৩০ কোটি টাকার বেশি অর্থ নেয়ার প্রমাণ পায় বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ পরিদর্শন টিম। বাচ্চু ও তার ভাই পান্নার ব্যাংক হিসাব বিবরণী থেকে এসব তথ্য বেরিয়ে আসে। এ ঘটনায় বাচ্চুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ২০১৪ সালে দুদকের কাছে অনিয়মের দালিলিক তথ্য পাঠায় বাংলাদেশ ব্যাংক।
অভিযোগ সূত্রে আরও জানা যায়, ঋণের অজুহাতে অনেক ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংক থেকে টাকা বের করে দিয়েছেন বাচ্চু। আবার অনেক প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব থাকলেও তারা ঋণখেলাপি কিনা বা তারা যেসব সম্পদ বন্ধক রেখে ঋণের আবেদন করেছে তাদের সেই সম্পদ বা জমির অস্তিত্ব আছে কিনা- এসব তথ্য পরীক্ষা না করেই মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়ে তাদের ঋণ দেয়া হয়েছে। আর ওই ঘুষের টাকার ভাগ নিয়েছেন আবদুল হাই বাচ্চু এবং তার পরিবারের সদস্যরা।
অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে দুদকের উপপরিচালক সামসুল আলম ২৩ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) মহাব্যবস্থাপকের কাছে চিঠি পাঠিয়ে বাচ্চু ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে ব্যাংকের যাবতীয় লেনদেনের তথ্য চান।
(দ্য রিপোর্ট/এনটি/মে ৩০, ২০১৮)