ভারতে নিপা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৫
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: ভারতের কেরালায় নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও দুই ব্যক্তির মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে প্রাণঘাতি এ ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৫-তে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
মারা যাওয়া সর্বশেষ দুজনও কেরালার কোঝিকোদেতে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
কারাসেরির ২৮ বছর বয়সী একজনের রক্তের নমুনায় ভাইরাসটির উপস্থিতি পাওয়ার পর পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির এক সূত্র নিপায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১৭তে দাঁড়িয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে।
সোমবার কলকাতায় মারা যাওয়া এক সৈন্যও ভাইরাসটিতে আক্রান্ত ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। সিনু প্রসাদ নামে কেরালার বাসিন্দা ওই সৈন্যের কর্মস্থল ছিল কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামে।
কেরালায় মাসখানেকের ছুটি কাটিয়ে ফেরার ৭ দিনের মাথায় ২০ মে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
সিনুর রক্তের নমুনাও পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে পাঠানো হয়েছে; ভারতের মধ্যে একমাত্র এই প্রতিষ্ঠানই রক্তে নিপা ভাইরাস সনাক্ত করতে পারে।
প্রাণঘাতি এই ভাইরাস মানুষের পাশাপাশি অন্যান্য প্রাণীর সংস্পর্শেও ছড়াতে পারে। এ দফায় কেরালার কোঝিকোদের এক বাড়ির ভেতরকার অব্যবহৃত কুয়া থেকে ভাইরাসটির সংক্রমণ শুরু হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ওই কুয়াটির ভেতর বেশ কয়েকটি মৃত বাদুড় পাওয়া গেছে। ওই পরিবারটি বাবা ও দুই সন্তানসহ চারজন নিপায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
নিপা ভাইরাসে সংক্রমণের লক্ষণগুলো হল- শ্বাসকষ্ট, মস্তিস্কে প্রদাহ, জ্বর, মাথাব্যথা, তন্দ্রাচ্ছন্নতা, বিভ্রান্তভাব ও প্রলাপ বকা। আক্রান্ত রোগী সংক্রমণের ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে গভীর কোমায়ও চলে যেতে পারেন।
এখন পর্যন্ত ভাইরাসটির কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কৃত হয়নি বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্থাস্থ্য সংস্থা। ‘নিবিড় পরিচর্যাই’ আক্রান্ত ব্যক্তির একমাত্র চিকিৎসা, বলেছে তারা।
১৯৯৮ সালে মালয়েশিয়ার কাম্পুং সুনগাই নিপা এলাকায় প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর প্রথমবারের মতো এ ভাইরাস শনাক্ত হয়। ২০০৪ সালে বাংলাদেশেও ফলখেকো বাদুড়ের মাধ্যমে সংক্রমিত খেজুরের রস খেয়ে অনেকে এ রোগটিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
বাদুড়, শুকর বা অন্য কোনো আক্রান্ত প্রাণি ও ব্যক্তির সরাসরি সংস্পর্শে নিপা অন্যদেহে ছড়ায়। আক্রান্তদের মধ্যে ৭০ শতাংশই মারা যান বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
সংক্রমণ থেকে দূরে থাকতে গাছের নিচে পড়ে থাকা ফল না খাওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/মে ৩১, ২০১৮)