দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট জেএসসি (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষায় বাংলা এবং ইংরেজি বিষয়ের মানবণ্টন নির্ধারণ করা হয়েছে।

সে অনুযায়ী চলতি বছর এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। নম্বর কমানোর সিদ্ধান্তের পরেই জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) থেকে এ মানবণ্টন তৈরি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এনসিটিবি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, আগামী জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা থেকে নম্বর ও বিষয় কমাতে গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির (এনসিসিসি) সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভা শেষে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন জানান, শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যানদের সংগঠন আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সুপারিশের আলোকে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় বাংলা বিষয়ে ৫০ ও ইংরেজি বিষয়ে ৫০ এবং ঐচ্ছিক বিষয়ে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা না হয়ে তা ক্লাসে মূল্যায়ন করা সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরপর সে ভিত্তিতে পরীক্ষার মানবণ্টনে এনসিটিবি’কে নির্দেশনা দেয়া হয়। তার ভিত্তিতে এ পরীক্ষার প্রশ্নের নম্বর বিভাজন তৈরি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার নতুন নম্বর বিভাজনে বাংলা বিষয়ে দেখা গেছে, বাংলা দুটি বিষয় একত্রিত করে মোট ১০০ নম্বরে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তার মধ্যে সৃজনশীল ও রচনামূলক অংশে ৭০ নম্বর এবং বহু নির্বাচনী অংশে ৩০ নম্বর বরাদ্দ থাকবে। প্রতিটি সৃজনশীল প্রশ্নের নম্বর ১০ এবং প্রতিটি বহু নির্বাচনী প্রশ্নে নম্বর থাকবে এক।

বাংলায় গদ্য অংশ থেকে ৩টি এবং কবিতা থেকে ৩টি করে মোট ৬টি সৃজনশীল প্রশ্ন থাকবে। এরমধ্যে গদ্য ও কবিতা অংশ থেকে ২টি করে মোট ৪টি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে, যার নম্বর থাকবে ৪০। সারাংশ, সারমর্ম এবং অনুধাবন পরীক্ষণ থেকে ২টি প্রশ্ন থাকবে, যে কোনো ১টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে; এর জন্য ৫ নম্বর নির্ধারিত। ভাব-সম্প্রসারণ এবং অনুচ্ছেদ থেকে ২টি প্রশ্ন থাকবে, যে কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে; যার নম্বর থাকবে ৫। ৩টি বিষয়ের মধ্যে যে কোনো ১টি বিষয়ের প্রবন্ধ রচনা লিখতে হবে; এর জন্য ১৫ নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়াও বহু নির্বাচনী প্রশ্নে গদ্য অংশ থেকে ৮টি, কবিতা থেকে ৮টি এবং ব্যাকরণ থেকে ১৪টি মোট ৩০ বহুনির্বাচনী প্রশ্ন থাকবে।

ইংরেজি বিষয়কে চারটি বিভাগে ভাগ করা হয়েছে। পার্ট ‘এ’ অংশে এমসিকিউ রাখা হয়েছে; সেখানে রিডিংয়ে ৭টি প্রশ্ন, শূন্যস্থান পূরণে ৫টি এবং সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তরমূলক ৮টি (যার প্রতিটিতে ২ নম্বর) প্রশ্ন থাকবে। পার্ট ‘বি’ তে ইনফরমেশন ট্রান্সফারে ৫ নম্বর, সত্য/মিথ্যায় ৫ নম্বর, বিষয় শনাক্তকরণ (সূত্র ছাড়া ও সূত্র যুক্ত) ৫ যোগ ৫ মোট ১০ এবং মিলকরণে ৫ নম্বর রয়েছে।

এদিকে, পার্ট ‘সি’ তে রয়েছে গ্রামার প্রশ্ন। এ অংশে থাকবে মোট ২৫ নম্বর; সেখানে বক্তৃতা ৫, যতিচিহ্ন প্রশ্নে ৫, ইউজ অব আরটিক্যালে ৫, ভয়েস, সেনটেন্স, ইন্ট্রোগেটিভ, এফারমেটিভ, নেগেটিভ, এক্সক্লেমেটরি, সাফিক্স এবং প্রি-ফিক্স প্রশ্নে ৫ নম্বর দেয়া থাকবে। সর্বশেষ ‘ডি’ অংশে রয়েছে ডায়ালগ ১০, প্যারাগ্রাফ ১০, ফরমাল/ইনফরমাল ই-মেইল ১০ নম্বর যুক্ত করা হয়েছে।

বাংলা ১ম ও বাংলা দ্বিতীয় এবং ইংরেজি ১ম ও দ্বিতীয় বিষয়ে আলাদা আলাদা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না। দুটি বিষয়কে এক করে বাংলায় মোট ১০০ ও ইংরেজিতে ১০০ নম্বরে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমানে চতুর্থ বিষয়সহ ১০টি বিষয়ে মোট ৮৫০ নম্বরের পরীক্ষা হয়। এরমধ্যে বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র মিলে ১৫০ নম্বরে এবং ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রে ১৫০ নম্বরে পরীক্ষা হতো। আর জেডিসিতে আগে ১০৫০ নম্বরের পরীক্ষা হতো। এখন থেকে ৯৫০ নম্বরে পরীক্ষা হবে। বাংলা ও ইংরেজিতে ১০০ ও ঐচ্ছিক বিষয়ে ১০০ মোট ২০০ নম্বর কমানো হয়েছে জেএসসি ও জেডিসিতে।

এ বিষয়ে এনসিটিবি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে আমরা জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার নতুন মানবণ্টন তৈরি করে দিয়েছি। এনসিসিসি’র সভায় সেটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে স্ব স্ব বোর্ডগুলোতে চিঠি দিয়ে তা বাস্তবায়ন করতে বলা হবে। চলতি বছর থেকে নতুন প্রশ্নে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/জুন ০৪, ২০১৮)