দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: মাদক নির্মূলে গণসচেতনতা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

তিনি বলেন, ‘যেখানে অবৈধ মাদক, সেখানেই অবৈধ টাকা ও অবৈধ অস্ত্র থাকে। ফলে সেসব স্থানে অভিযানে গেলে ফায়ারিং তো হবেই।’ শনিবার (৯ জুন) দুপুরে রাজধানীর ইস্কাটনে বিআইআইএসএস মিলনায়তনে ‘মাদকবিরোধী অভিযান ও সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

একরামুল হকের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। কেউ যদি এ অভিযানে ভুল করে থাকে, তবে আইনের আওতায় আনা হবে। আমরা কাউকে ছাড় দিচ্ছি না।’

মাদকবিরোধী অভিযান প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘অভিযানে শুধু বন্দুক যুদ্ধে নিহত হচ্ছে, তা নয়। বর্তমানে সারা দেশের কারাগারে ৮৬ হাজার বন্দি রয়েছে। এর মধ্যে ৩৯ শতাংশই মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবী। এতেই বোঝা যায়, মাদকের বিরুদ্ধে আমরা শুধু বন্দুকযুদ্ধ করছি না, সাজা দিয়ে আসামীদের কারাগারেও পাঠানো হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘চলমান অভিযানের পর অনেকেই আমাকে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছেন।’

মাদক নিয়ন্ত্রণ আইন সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সিসা বারের ভেতরে নতুনভাবে মাদকে উদ্ভব হচ্ছে। যা যুব সমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। এই কারণে আমরা মাদক আইনের সংশোধন করছি। ওই আইনে সিসাকেও মাদক হিসেবে রাখা হবে। আমরা আইন সংস্কার করে সিসা বারের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেব।’

তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের সঙ্গে ইয়াবা ট্যাবলেটের বিষয়ে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক চুক্তিও হয়েছে। সেই সবগুলোয় মিয়ানমার স্বাক্ষর করেছে। কিন্তু তারা ইয়াবা বন্ধের বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। এ বিষয়ে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সাং সু চির সঙ্গেও কথা বলেছি, কিন্তু কোনো সহযোগিতা পাইনি।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে টেকনাফ যাই। সেখানে মাদকের পরিস্থিতি দেখে দুই থানার ওসি থেকে কনস্টেবল পর্যন্ত সবাইকে বদলি করে দিয়েছি। আমাদের সীমান্তে একটি বিওপি থেকে অন্য বিওপিতে যেতে অনেক সময় লাগে। এরমধ্যে রাস্তা ভালো না। আমরা সেখানে রাস্তা তৈরির জন্য চেষ্টা করছি। যেন বিজিবি ওইসব এলাকায় সহজে টহল দিতে পারে। নাফ নদী দিয়ে রোহিঙ্গা আসা বন্ধের পর সেখান দিয়ে ইয়াবা আসে না। ওইসব অঞ্চলে বিজিবি ও কোস্টগার্ড বোটে করে তাদের টহল অব্যাহত রেখেছে। সেখানে মাছ ধরাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আগে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের জনবল কম ছিল। প্রতি তিন জেলার জন্য একজন ছিল। তবে এবার আমার দেশের প্রতিটি জেলায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের আলাদা ইউনিট তৈরি করেছি।’

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালন (ডিজি) মো. জামাল উদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে গোলটেবিল অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম, সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) মো. আখতারুজ্জামান, প্রমিসেস মেডিকেল লিমিটেডের চেয়ারম্যান শাহেদুল ইসলাম হেলাল, বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক ড. এম এনামুল হক, নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম ইমদাদুল হক প্রমুখ।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/জুন ০৯, ২০১৮)