খাদের কিনার থেকে শেষ ষোলোতে আর্জেন্টিনা
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : খাদের কিনার থেকে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াল আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচে মাত্র ১ পয়েন্ট পাওয়া দলটিই দুর্দান্ত জয় পেল গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে। লিওনেল মেসির গোলের তারা এগিয়ে যাওয়ার পর নাইজেরিয়া পেনাল্টি গোলে শঙ্কায় পড়েছিল তাদের বিশ্বকাপে টিকে থাকার সম্ভাবনা। তবে খেলা শেষ হওয়ার ৪ মিনিট আগে মার্কোস রোহোর দুর্দান্ত গোলে নকআউটে উঠল আর্জেন্টিনা। ২-১ গোলের জয়ে ‘ডি’ গ্রুপের রানার্সআপ তারা।
মঙ্গলবার গ্রুপের আরেক ম্যাচে ক্রোয়েশিয়া ২-১ গোলে হারিয়েছে আইসল্যান্ডকে। আর্জেন্টিনাকে প্রথম ম্যাচে রুখে দেওয়া আইসল্যান্ড ১ পয়েন্ট নিয়েই বিদায় নিলো বিশ্বকাপ থেকে। আর তাদের বিপক্ষে দারুণ জয়ে ৩ পয়েন্ট পাওয়া নাইজেরিয়া ছিটকে গেল আর্জেন্টাইনদের কাছে হেরে। ৪ পয়েন্ট পাওয়া আর্জেন্টিনার শেষ ষোলোর প্রতিপক্ষ ‘সি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স।
সেন্ট পিটার্সবার্গে প্রথম আক্রমণ চালায় নাইজেরিয়া। কিন্তু সুবিধা করতে পারেনি। ৯ মিনিটে আহমেদ মুসার শটটি গোলবারের উপর দিয়ে চলে যায়। চার মিনিট পর হাভিয়ের মাসচেরানো পা থেকে বল হারালে কেলেচি আইহিনাচো আর্জেন্টিনার রক্ষণকে একটু চাপে ফেলেছিলেন। তবে মাসচেরানোই ভুল শুধরে নেন তাকে প্রতিহত করে।
পরের মিনিটে আকাশি-নীল উদযাপনে মেতে ওঠে গ্যালারি। এভার বানেগার লম্বা ক্রস বক্সের কিছুটা দূর থেকে পেয়ে ঊরু দিয়ে বল নিয়ন্ত্রণে নেন লিওনেল মেসি। তারপর ডান পায়ের চমত্কার কোনাকুনি শট নেন তিনি, নাইজেরিয়ার গোলরক্ষক ফ্রাঙ্কিস উজোহার ধরাছোঁয়ার বাইরে দিয়ে বল দূরের পোস্ট দিয়ে জড়ায় জালে।
বিশ্বকাপে এটি ছিল মেসির ষষ্ঠ গোল, আর রাশিয়ার এই আসরে শততম গোল।
২৭ মিনিটে আরেকটি গোলের সুযোগ পায় আর্জেন্টিনা। মেসির বাড়িয়ে দেওয়া বল নিয়ে হিগুয়েইন ঢুকে পড়েছিলেন প্রতিপক্ষের বক্সে। কিন্তু সামনে এগিয়ে এসে তাকে বাধা দেন উজোহা। ৩২ মিনিটে দারুণ মুহূর্ত তৈরি করেছিলেন আনহেল দি মারিয়া। দ্রুত গতিতে তিনি বক্সে ঢোকার আগে বালোগান তাকে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন।
এই ফ্রি কিক থেকে মেসির শট বাঁ দিকে ঝাপিয়ে পড়ে ঠেকান। বল উজোহার হাত ছুঁয়ে পোস্টে আলতো স্পর্শ করে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। প্রথমার্ধ আর্জেন্টিনা শেষ করেছে ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে।
কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে নাইজেরিয়া সমতা ফেরায়। ৪৯ মিনিটে এতেবোর কর্নার কিক বক্সে ঢোকার মুহূর্তে মাসচেরানো ফাউল করেন বোলোগানকে। ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি দেন পেনাল্টির সিদ্ধান্ত, মাসচেরানো দেখেন হলুদ কার্ড। ১২ গজ দূর থেকে লক্ষ্যে শট নেন ভিক্টর মোসেস। ৫১ মিনিটে তার ধীর গতির নিচু শটের বিপরীত দিকে ঝাপিয়ে পড়েন আরমানি, বল জড়ায় জালে। সমতা ফেরানো আনন্দে মাতে আফ্রিকানরা।
নাইজেরিয়া দারুণ সুযোগ পায় ৭২ মিনিটে। আর্জেন্টিনার রক্ষণের ফাঁক থাকার সুযোগ নিয়ে বক্সের বেশ দূর থেকে শট নেন এনদিদি। তার জোরালো শট ক্রসবারের উপর দিয়ে চলে যায়। চার মিনিট পর আরেকটি পেনাল্টির শঙ্কায় পড়ে আর্জেন্টিনা। মার্কোস রোহো ডিবক্সের মধ্যে বল বিপদমুক্ত করেন, কিন্তু তার মাথা ছুঁয়ে হাতে লাগে। ভিএআর দেখে রেফারি সিদ্ধান্তে পৌঁছান, ইচ্ছা করে বল হাত দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করেননি রোহো।
৮১ মিনিটে রোহোর পাস বক্সের মধ্যে পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি হিগুয়েইন। তার শট অনেক উঁচু দিয়ে চলে যায় মাঠের বাইরে। দুই মিনিট পর আরমানি দারুণ সেভে নাইজেরিয়াকে এগিয়ে যেতে দেননি।
৮৬ মিনিটে মেরকাদোর নিখুঁত ক্রস বক্সের মাঝখান থেকে প্রথম শটেই জালে পাঠান রোহো।
(দ্য রিপোর্ট/টিআইএম/জুন ২৭, ২০১৮)