রং নাম্বারে পরিচয়ে প্রেম, যশোরে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ
যশোর অফিস: রং নাম্বারে পরিচয়, তারপর প্রেম, প্রতারণা, সবশেষে ধর্ষণ। এভাবে মোবাইল প্রেম সম্ভ্রম কেড়ে নিলো দশম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীর। প্রতারণার শিকার ওই স্কুলছাত্রী যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাঠি ইউনিয়নের মেয়ে। তাকে ডাক্তারী পরীক্ষা শেষে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। ধর্ষক প্রেমিককে আটক করে কোর্টের মাধ্যমে চালান দেয়া হয়েছে। এব্যাপারে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা হয়েছে।
ভুক্তভোগী ছাত্রীটি জানায়, গত প্রায় একমাস আগে মোবাইলে রং নাম্বারে যোগাযোগ হয় মাগুরা শালিখা উপজেলার সান্দোড়া গ্রামের গোলদার মোল্লার ছেলে হাবিবুর রহমানের (২৫) সাথে। ওই সময় ছেলেটি তাকে জানায় সে বিদেশে থাকতো, কিছুদিন হলো বাড়িতে এসে ব্যবসা করছে এবং এক বন্ধুর সাথে মিলে একটি বাসও কিনেছে। সে এখনও বিয়ে করেনি এবং বিয়ের জন্য মেয়ে খুঁজছে। নিয়মিত কথা বলতে বলতে একপর্যায়ে সে ছেলেটির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে। তাদের সাথে প্রতিদিন কথা হতো। গত ঈদের সময় যশোর ক্যান্টনমেন্টে অবস্থিত বিনোদিয়া পার্কে তারা দুজনে লুকিয়ে দেখা করে। দেখা হওয়ার পর আরো ঘনিষ্ট হয় তারা। বিয়ের বয়স না হওয়ায় এবং বাবা-মায়ের সম্মতি পাওয়া যাবে না ভেবে তারা পালিয়ে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেয়।
মেয়েটি আরো জানায়, একপর্যায়ে গত ২৪ জুন সকালে স্কুলে যাবার কথা বলে সে বাড়ি থেকে বের হয়। আগে থেকে পরিকল্পনা অনুযায়ী হাবিবুর চুড়ামনকাঠি বাজারে আসে এবং দুজনে যশোর হয়ে মাগুরায় আল-আমিন নামে এক বন্ধুর বাড়ি গিয়ে ওঠে। সেখানে দুজনে স্বামী স্ত্রী পরিচয় দিয়ে অবস্থান করে।
এদিকে মেয়েকে ফিরে পেতে তার সাথে পরিবার থেকে যোগাযোগ শুরু করে তার বাবা। প্রথমে রাজি না হলেও দুজনের বিয়ে দেয়ার কথা বললে তারা ফিরে আসতে রাজি হয়। ২৭ জুন বুধবার সন্ধ্যার দিকে হাবিবুরকে নিয়ে সে বাড়ি ফিরে আসে। তার বাবা কথা মত শুরু করেন বিয়ের তোড়জোড়। কিন্তু ছেলের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে শুরু হয় বিপত্তি। বেশি রাত হয়ে যাবার অজুহাতে ছেলেটি বলে, সকালে সে তার বাবার ফোনে কথা বলিয়ে দেবে। বার বার চেষ্টা করেও তার কাছ থেকে মোবাইল নম্বর না পেয়ে সন্দেহ হয় মেয়েটির বাবার। তখন তারা ছেলেটির বাড়ির পাশে এক পরিচিত জনের কাছে তার ব্যাপারে খোঁজ নেয়। আর তাতেই বেরিয়ে আসে আসল ঘটনা। সেখান থেকে জানানো হয় ছেলেটি আসলে একজন প্রতারক। তার সেরকম কোনো ব্যবসা নেই। সে এর আগে আরো দুবার বিয়ে করেছে। প্রথম স্ত্রীর এক সন্তান থাকলেও তাকে তালাক দিয়েছে। দ্বিতীয় স্ত্রী ঘরেই আছে এবং সন্তান সম্ভবা।
আকাশ ভেঙ্গে পড়ে মেয়েটি ও তার পরিবারের মাথায়। একথা শোনার পর হাবিবকে তারা মারধর করে আটকে রাখে। এদিকে পুলিশ এই খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সেখানে গিয়ে ছেলেটিকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। একই সাথে মেয়ে এবং তার পরিবারের লোকজনকেও থানায় এনে মামলা রুজু করে।
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/জুন ২৯,২০১৮)