দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বাংলাদেশের মানুষ বিশেষ করে কক্সবাজারের স্থানীয়রা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ করছেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

শনিবার (৩০ জুন) রাতে দু’দিনের সফরে ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমে তিনি এসব কথা বলেন।

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, জাতিগত নির্মূল অভিযানের মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা আশ্রয়প্রার্থী ও বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করতে বাংলাদেশ সফরে এসেছেন তিনি। কক্সবাজার স্থানীয়দের সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণে তিনি মুগ্ধ বলেও জানান।

রাত ১টা ৪৫ মিনিটে কাতার এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তিনি হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে নামেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বিমানবন্দরে জাতিসংঘ মহাসচিবকে স্বাগত জানিয়েছেন। বিমানবন্দর থেকে র্যাডিসন হোটেলে উঠেছেন আন্তোনিও গুতেরেস। দুই দিনের বাংলাদেশ সফরে এই হোটেলেই থাকবেন তিনি। এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকায় আসেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম। তিনিও র্যাডিসন হোটেলে উঠেছেন।

জাতিসংঘ মহাসচিব ও বিশ্বব্যাংক প্রধান সোমবার (২ জুলাই) কক্সবাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবির পরিদর্শন করবেন বলে জানা গেছে।

রবিবার (১ জুলাই) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কার্যালয়ে বৈঠক করবেন জাতিসংঘের মহাসচিব। বৈঠক শেষে ২০৩০ টেকসই উন্নয়ন এজেন্ডা শীর্ষক অধিবেশনে যোগ দেবেন তিনি।

এর পর তিনি ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শনে যাবেন। তেজগাঁওয়ে হলিক্রস গার্লস স্কুলেও যাওয়ার কথা রয়েছে তার। বিকালে হোটেল র্যাডিসনে জাতিসংঘের কান্ট্রি টিমের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। একই হোটেলে ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসবেন জিম ইয়ং কিম। এছাড়া জাতিসংঘ ও বিশ্বব্যাংক কর্মকর্তাদের এক পুনর্মিলনিতে অংশ নিবেন গুতেরেস।

সন্ধ্যায় হোটেল প্যান প্যাসেফিক সোনারগাঁওয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের সম্মানে ভোজের আয়োজন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার সকালে বিমান বাংলাদেশের একটি বিশেষ ফ্লাইটে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়বেন গুতেরেস। এর পর ঢাকায় ফিরে ওই দিন সন্ধ্যায় হোটেল র্যাডিসনে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজনের কথা রয়েছে তার।

জাতিসংঘ মহাসচিব ও বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ছাড়াও বাংলাদেশ সফরে রয়েছেন আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির (আইসিআরসি) প্রেসিডেন্ট পিটার মাউরা। একই সময়ে কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থা ও সংগঠনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সফরকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। গুতেরেস এর আগেও ইউএনএইচসিআরের শীর্ষ পদে থাকা অবস্থায় ২০০৮ সালে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা আশ্রয় কেন্দ্র পরিদর্শনে এসেছিলেন। তখনকার তুলনায় রোহিঙ্গা সংকট শোচনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। জাতিসংঘ মহাসচিবের দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশে এটাই তার প্রথম সফর।

জাতিসংঘ মহাসচিব ও বিশ্বব্যাংকের প্রধানের এই সফরকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে ঢাকা। রোহিঙ্গা সংকটকে কেন্দ্র করে এ সফর নতুন করে বিশ্ব সম্প্রদায়ের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/জুলাই ০১, ২০১৮)