গোলরক্ষকের কৌশলে কোয়ার্টারে ক্রোয়েশিয়া
স্পোর্টস ডেস্ক, দ্য রিপোর্ট: রাশিয়া-স্পেনের মতোই দ্বিতীয় রাউন্ডের দ্বিতীয় খেলা ডেনমার্ক ও ক্রোয়েশিয়ার মধ্যকার ম্যাচটি নিস্পত্তি হলো টাইব্রেকারে। ৪ মিনিটে ২ গোলে ডেনমার্ক ও ক্রোয়েশিয়ার ম্যাচ দারুণ উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। কিন্তু তারপর নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়েও আর কেউ গোলের দেখা পায়নি। ১-১ গোলের ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে, যা ক্রোয়েশিয়া জিতে নেয় ৩-২ গোলে।
টাইব্রেকারের প্রথম দুটি শট লক্ষ্যভ্রষ্ট করতে সফল হন ক্রোয়েশিয়া ও ডেনমার্কের গোলরক্ষক সুবাসিচ ও শুমেইখেল। পরের দুটি করে শটে লক্ষ্যভেদ করে দুই দল। তবে চতুর্থ শট রুখে দেন সুবাসিচ, পরের শট ঠেকিয়ে সমতা ফেরান শুমেইখেল। পঞ্চম শটও ঠেকিয়ে দেন ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক। কিন্তু পঞ্চম শটটি আর ঠেকাতে পারেন নি ডেনমার্কের গোলরক্ষক শুমেইখেল, যিনি অতিরিক্ত খেলার শেষ দিকে (১১৪ মিনিটে) ক্রোয়েশিয়ার একটি পেনাল্টি ঠেকিয়ে দিয়ে দলকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছিলেন।
ম্যাচ শুরুর বাঁশি বাজতে না বাজতে গোল উদযাপনে মেতেছিল ডেনমার্ক। জোনাস নুডসেনের লম্বা থ্রো থেকে ক্রোয়েটদের ডিবক্সের বল পান থোমাস ডিলানে। বাঁ দিকে বল বাড়িয়ে দেন তিনি। মাতিয়াস জর্গেনসেন ক্রোয়েশিয়ার ডিফেন্ডার দোমাগো ভিদার পায়ের নিচ দিয়ে পাঠিয়ে ক্রোয়েট গোলরক্ষক দানিয়েল সুবাসিচকে পরাস্ত করেন। ২০১৪ সালে ঘানার বিপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের ক্লিন্ট ডেম্পসে ২৯ সেকেন্ডে গোল করেছিলেন। এদিন দেখা গেল বিশ্বকাপের দ্বিতীয় দ্রুততম গোলের।
তবে ডেনিসদের বেশিক্ষণ এগিয়ে থাকতে দেয়নি ক্রোয়েশিয়া। ৪ মিনিটে ক্রিস্টেনসেন বল বিপদমুক্ত করতে ব্যর্থ হলে বাঁ পোস্টে দাঁড়ানো মারিও মানজুকিচ সমতা ফেরানো গোল করেন।
বিশ্বকাপে এনিয়ে চতুর্থবার চার মিনিটের মধ্যে দুই গোল হলো। আর দুই দলের চার মিনিটে দুই গোল দেওয়ার ঘটনা ঘটল কেবল দ্বিতীয়বার।
পরের সুবর্ণ সুযোগটি পেয়েছে ক্রোয়েশিয়া ২৯ মিনিটে। বেশ দূর থেকে গোলমুখে শট নেন ইভান রাকিতিচ। ডেনমার্ক গোলরক্ষক ক্যাস্পার শুমেইখেল সেটা প্রতিহত করলে উইং থেকে আন্তে রেবিচ ফিরতি শট নেন। আবারও শুমেইখেল বল পাঠান সামনের দিকে। গোলপোস্টের সামনে বেশ ফাঁকা জায়গায় বল পান ইভান পেরিসিচ, কিন্তু তিনি জোরালো শট করেন গোলবারের উপর দিয়ে।
৩৯ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে মদরিচের নিখুঁত ক্রসে দেহান লভরেন লক্ষ্যে হেড করেছিলেন, কিন্তু বল চলে যায় গোলবারের পাশ দিয়ে। পরের মিনিটে ইউসুফ পলসেনের পাস থেকে বল পায়ে নিতে পারেননি ডেনমার্ক স্ট্রাইকার আন্দ্রেস কর্নেলিয়াস।
৪৪ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে পাস পেয়ে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন রাকিতিচ। তার দুর্বল শট ডাইভ দিয়ে থামান শুমেইখেল।
দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে সুযোগ তৈরিতে এগিয়ে ছিল ডেনমার্ক। যদিও দুর্বল ফিনিশিংয়ে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায়নি তারা। পলসেন ও ক্রিস্টিয়ান এরিকসেনের ওয়ান-টু পাসে কর্নেলিয়াসের শট গোলবারের পাশ দিয়ে ব্যর্থ হয়। বদলি নেমে নিকোলাই জর্গেনসেন ৭২ মিনিটে দারুণ সুযোগ পেয়েও সুবাসিচের কাছে সরাসরি বল দেন।
নির্ধারিত সময়ের শেষ ৫ মিনিট পেরিসিচ দুইবার লক্ষ্যভেদ করতে ব্যর্থ হন গোলবারের উপর দিয়ে বল মেরে।
ইনজুরি সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে ২৭ গজ দূর থেকে নেওয়া রাকিতিচের শট বাঁ পোস্টের পাশ দিয়ে চলে যায়।
অতিরিক্ত সময়ের দুই অর্ধে সুযোগ তৈরি করেছে কেবল ডেনমার্ক। ৯৯ মিনিটে বাঁ পা দিয়ে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডান পায়ে লক্ষ্যে শট নেন স্কোনে। কিন্তু বল চলে যায় গোলবারের পাশ দিয়ে। বাঁ প্রান্ত থেকে পিওনে সিস্তোর ১০৭ মিনিটের শট গোলপোস্টের সামনে দিয়ে মাঠের বাইরে চলে যায়।
তাদের হতাশ করে ১১৪ মিনিটে পেনাল্টি পায় ক্রোয়েশিয়া। দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে ডিবক্সে ঢুকে পড়া রেবিচকে ফাউল করেন জর্গেনসেন। স্পট কিক করেন লুকা মদরিচ। কিন্তু তার নিচু শট বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকান শুমেইখেল।
১১৮ মিনিটে লক্ষ্যে নেওয়া মদরিচের শট আবার রুখে দেন ডেনমার্ক গোলরক্ষক।
(দ্য রিপোর্ট/টিআইএম/২ জুলাই,২০১৮)