কক্সবাজারে জাতিসংঘ ও বিশ্বব্যাংকের দুই প্রধান
কক্সবাজার প্রতিনিধি : মিয়ানমারে নির্যাতনের ভয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি দেখতে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস ও বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম কক্সবাজার পৌঁছেছেন।
সোমবার (২ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাংলাদেশ বিমান (ইএ১৭০৮) একটি বিশেষ বিমানে করে তারা কক্সবাজার পৌঁছান।
সেখানে অবস্থানকালে এ দুই নেতা রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও উখিয়া সদর হাসপাতাল পরিদর্শন করবেন। রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি স্বচক্ষে দেখার পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে নিরাপদ, স্বেচ্ছা এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের অগ্রগতিও জানবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিকারুজ্জামান জানান, সোমবার সকালে প্রতিনিধি দলটি উখিয়ার কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন। এ সময় প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গাদের থাকা, খাওয়া ও চিকিত্সা সেবা পর্যবেক্ষণ করবেন এবং মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা নির্যাতিত রোহিঙ্গা নারীদের সঙ্গে কথা বলবেন।
সকালে বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর ৯টার দিকে তাদের সায়মন বিচ রিসোর্টে নেওয়া হবে। সেখানে তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রাণালয়ের কর্মকর্তা ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার প্রতিনিধিদের সংক্ষিপ্ত ব্রিফিং করবেন।
সকাল ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের উদ্দেশে রওনা হবেন এবং ১০টা ৪০ মিনিটে কুতুপালং ট্রানজিট রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছাবেন। দুপুর ১টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত ট্রানজিট ক্যাম্পের এক্সটেনশন-৪, নিবন্ধিত সি-ব্লক ও ডি-৫ ব্লকের বিভিন্ন ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন। এসময় ইউএনএফপিএ-এর নারী কেন্দ্রে ১০-১৫ জন নির্যাতিত রোহিঙ্গা নারীর সঙ্গে কথা বলবেন।
এরপর আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এর ৫টি প্রাইমারি স্বাস্থ্য সেবাকেন্দ্র পরিদর্শন করবেন। পরে ডি-৫ ব্লকে নির্যাতিত ৫০ জন রোহিঙ্গা নারী ও ১০০ জন রোহিঙ্গা পুরুষের সঙ্গে আলাপ করবেন। দুপুর ২টার পরে একই ব্লকে প্রেস ব্রিফিং করার কথা রয়েছে।
বিকাল ৩টার দিকে কক্সবাজার শহরে ফিরে আসবেন। আর সাড়ে ৪টার দিকে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা ও এনজিও কর্মকর্তা ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে করবেন। বিকাল সাড়ে ৫টা দিকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন। আর এ নিয়ে সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা রেডিসন হোটেলে প্রেস ব্রিফিং করার কথা রয়েছে।
গত বছরের আগস্টে রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিধন অভিযান শুরুর পর থেকে বাংলাদেশে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। এসব রোহিঙ্গাকে নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে একটি প্রত্যাবাসন চুক্তি হলেও এখনো পর্যন্ত প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হয়নি।
জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার দাবি রোহিঙ্গাদের ফেরার মতো উপযুক্ত পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি মিয়ানমারে। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে বাংলাদেশ। এমন পরিস্থিতিতে এই দুই আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানের বাংলাদেশ সফর গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে।
(দ্য রিপোর্ট/এনটি/জুলাই ০২, ২০১৮)