মঙ্গলবার রাতে স্পার্টাক স্টেডিয়ামে নির্ধারিত সময় শেষে খেলা অমীমাংসিত ছিল ১-১ গোলে। বাড়তি ৩০ মিনিটেও ছিল সমতা। শেষে ফল আসে পেনাল্টি শুট আউটে। শেষ আটে ইংলিশদের প্রতিপক্ষ সুইডেন।

টাইব্রেকারে যা হয়েছে:
কলম্বিয়ার হয়ে প্রথম শটটি নেন অধিনায়ক রাদামেল ফ্যালকাও। তাতে আসে গোল।
ইংল্যান্ডের হয়ে প্রথম শট নিতে আসেন অধিনায়ক হ্যারি কেন। গোল।
কলম্বিয়া দ্বিতীয় শটেও আসে গোল।
ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় শটেও গোল।
কলম্বিয়া তৃতীয় শটেও গোল।
ইংল্যান্ড তৃতীয় শট নেন জর্ডান হ্যান্ডারসন। কলম্বিয়া গোলরক্ষক অসপিনা শট ফিরিয়ে দেন।
চতুর্থ শটে ব্যর্থ হয় কলম্বিয়া। মাতিয়েস উরিবে শট মারেন বারে।
চতুর্থ শটে গোল পায় ইংল্যান্ড।
কলম্বিয়ার পঞ্চম শট নেন কার্লোস বাক্কা। ইংলিশ গোলরক্ষক পিকফোর্ড তা ফিরিয়ে দেন।
ইংল্যান্ডের হয়ে পঞ্চম শট নেন এরিখ ডায়ার। সেই শটে গোল করে ইংলিশদের ৩-৪ ব্যবধানে কোয়ার্টার ফাইনালে তোলেন টটেনহ্যাম মিডফিল্ডার।

ম্যাচে যা হয়েছে:
হামেস রদ্রিগেজ নেই। আক্রমণের ভরসার অভাবে পিছিয়ে থাকা কলম্বিয়াকে তাতে রক্ষণেও কোণঠাসা করে রাখল ইংল্যান্ড। ম্যাচ শুরুর ১৫ মিনিটের মধ্যে তিন কর্নার ও এক ফ্রি-কিক আদায় করে ইংলিশরা ম্যাচের ফল টেনে নিতে চেষ্টা করল নিজেদের পক্ষে।

তবে প্রথমার্ধে গোল ধরা দেয়নি কারো ঝুলিতেই। গোলের বদলে একাধিকবার দুই দলের খেলোয়াড়দের হাতাহাতিই কেন্দ্রে থাকল ম্যাচের। জম্পেশ কিছুর জন্য তাই দ্বিতীয়ার্ধ অবধি অপেক্ষা।

ম্যাচের মেজাজ ধরে প্রথমার্ধের উত্তেজনার রেশ পরের অর্ধে বাড়তি উত্তাপ পেয়েছে। ৫৪ মিনিটে তো সেটি চরমে পৌঁছাল! কর্নার পেয়েছিল ইংল্যান্ড। কলম্বিয়া ডি-বক্সের সামনে ইংলিশ ফুটবলাদের জটলা। সেই জটলার মাঝেই ইংলিশ অধিনায়ক হ্যারি কেনকে অহেতুক টেনে ফেলে দেন কলম্বিয়ান ডিফেন্ডার কার্লোস সানচেজ, রাশিয়া বিশ্বকাপের প্রথম লাল কার্ড দেখেছেন যিনি। রেফারি সঙ্গে সঙ্গে ফাউলের বাঁশি বাজিয়ে নির্দেশ দেন পেনাল্টির।

পেনাল্টির পূর্ণ সুযোগ ব্যবহার করে রাশিয়া আসরে নিজের গোল সংখ্যাকে ৬-এ নিয়ে যান হ্যারি কেন। ইংলিশ অধিনায়ক ছুঁয়ে ফেলেন দারুণ এক মাইলফলকও। ১৯৩৯ সালে গড়া টমি লেওটনের পর দ্বিতীয় ইংলিশ খেলোয়াড় হিসেবে টানা ম্যাচে ছয় গোল করলেন কেন। সেটাও আবার মাত্র তিন ম্যাচে!

ম্যাচে তখন নতুন মোড়। সময়টাতে দুই দলের খেলোয়াড়দের চাইতে বেশি ব্যস্ত থাকতে হল মার্কিন রেফারি মার্ক গেইগারকেই। উদারহস্তে কার্ড বিলিয়েছেন। কার্ডের পরিমাণটা সাত

পুরো ম্যাচে ইংলিশদের রক্ষণে তেমন ঘেঁষতে না পারা কলম্বিয়া ৮১ মিনিটে একবারই পেয়েছে সুবর্ণ সুযোগ। কিন্তু সুবিধাজনক স্থানে বল পেয়েও বারের উপর দিয়ে যেভাবে বল মারলেন কুয়ার্দ্রাদো, তাতে মাথায় হাত পড়া ছাড়া উপায় ছিল না কলম্বিয়ার।

কুয়ার্দ্রাদোর এমন সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার পর মনেই হচ্ছিল ম্যাচটা বেরই হয়ে যাচ্ছে কলম্বিয়ার থেকে। কিন্তু উত্তেজনা ছড়ানো ম্যাচ চমক জমিয়ে রেখেছিল অতিরিক্ত সময় পর্যন্ত!

ম্যাচের তখন চলছে অতিরিক্ত তিন মিনিটের খেলা। আর দুই মিনিট গড়ালেই শেষ ষোলোতে চলে যাবে ইংল্যান্ড। এমন সময়ে মরিয়া কলম্বিয়া নিজেদের শেষ চেষ্টায় হামলে পড়ে। কর্নার থেকে কিক নিয়েছিলেন হুয়ান কুয়ার্দ্রাদো। লাফালেন ইয়েরি মিনা, ছোঁয়ালেন মাথায়। বারের নিচে দাঁড়িয়ে ছিলেন জেমি ভার্ডি। তিনিও মাথায় ছুঁয়ে ঠেকাতে চাইলেন বল। কিন্তু বল গোল লাইন অতিক্রম করে তার মাথায় লেগে জড়িয়ে যায় জালে। হারতে যাওয়া ম্যাচে সমতায় ফেরে কলম্বিয়া!

এই হেডে বিশ্বকাপে নিজের তৃতীয় গোলের দেখা পেলেন ইয়েরি মিনা, সবকটি হেডেই। যার দায়িত্ব আসলে রক্ষণ সামলানো! ২০০২ সালে মিরোস্লাভ ক্লোসার পর(৫টি) বিশ্বকাপে হেডে এত গোল করেননি আর কোনো ফুটবলারই।

পরে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। সেখানেও আর গোলের দেখা পায়নি দুদল। তাতে পা বাড়াতে হয় টাইব্রেকারে।