শরীরের দুর্গন্ধ দূর করার আধুনিক পদ্ধতি আবিস্কার
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : শরীরের দুর্গন্ধ দুর করার জন্য সাধারণত আপনি কি করেন? স্নান করেন, ডিওডোরেন্ট, অ্যান্টি-পার্সপির্যান্ট, পাউডারও মাখেন। অথবা বগলের লোম কামিয়ে ফেলেন।
কিন্তু গরমের দিনে শেষ পর্যন্ত কিছুই মনের মতো কার্যকর হয়না।
বিজ্ঞানীরা মনে করছেন তারা শরীরের দুর্গন্ধ দূর করার আরো অত্যাধুনিক পদ্ধতি খুঁজে পেয়েছেন। খবর- বিবিসির।
মানুষের বগল থেকে যে ঘাম বের হয় তা আসলে তেমন কোন গন্ধ নেই। কিন্তু ত্বকের উপর বাস করা একটি বিশেষ ব্যাকটেরিয়াই হল যতসব গন্ধের উৎস।
গন্ধহীন ঘামকে তারাই রূপান্তর করে ও মানুষের শরীরে গন্ধ ছড়ায়।
ইউনিভার্সিটি অফ ইয়র্ক এবং অক্সফোর্ড-এর দুটো গবেষণা দল বলছে কিভাবে এই ব্যাকটেরিয়া কাজটি করে সেই রহস্যের প্রথম ধাপ তারা উন্মোচন করেছেন।
তারা বলছেন এর মাধ্যমে শরীরের দুর্গন্ধ দূর করার আরো অত্যাধুনিক পদ্ধতি খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে।
ঘাম কিভাবে হয়?
শরীরের ত্বকে দুই ধরণের গ্ল্যান্ড বা গ্রন্থি থেকে ঘামের উৎপত্তি। শরীর চর্চা বা পরিশ্রমের ফলে যে ঘাম উৎপন্ন হয় তা তৈরি করে একরিন গ্রন্থি।
এই ঘামে দুর্গন্ধ নেই এবং তা আমাদের শরীরকে ঠাণ্ডা করে।
আরেকটি হল অ্যপোক্রিন গ্রন্থি। যার উপস্থিতি বগল ও গোপনাঙ্গের আশপাশে।
যেখানে রয়েছে অবাঞ্ছিত লোম। এখান থেকে যে ঘাম উৎপত্তি হয় তাতে রয়েছে এক বিশেষ ধরনের প্রোটিন।
যা দুর্গন্ধহীন হলেও ব্যাকটেরিয়ার কারণে এটি দুর্গন্ধে রূপান্তরিত হয়।
খুব সামান্য এই ব্যাকটেরিয়ার মারাত্মক ক্ষমতা। যারা তাদের কাজে ঐ প্রোটিনটি ব্যবহার করে।
ডিওডোরেন্ট নাকি অ্যান্টি-পার্সপির্যান্ট?
শরীরের দুর্গন্ধ দুর করতে সাধারণত জনপ্রিয় দুটি পণ্য হল ডিওডোরেন্ট ও অ্যান্টি-পার্সপির্যান্ট।
ডিওডোরেন্ট সুগন্ধি ব্যবহার করে দুর্গন্ধকে ঢেকে দেয়। এতে ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধী কিছু উপাদানও রয়েছে।
অন্যদিকে অ্যান্টি-পার্সপির্যান্ট ঘামের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। বলা যেতে পারে লোমকূপে এক ধরনের ছিপি এটে দেয়।
ইউনিভার্সিটি অফ ইয়র্ক-এর জীববিদ্যা বিভাগের ডঃ গ্যাভিন থমাস বলছেন, "আমাদের শরীরে যে ব্যাকটেরিয়া রয়েছে তার মধ্যে মাত্র কয়েকটি দুর্গন্ধের জন্য দায়ী"
এই ব্যাকটেরিয়ার বৈজ্ঞানিক নাম স্টেফালোককাস হমিনিস।
ডঃ থমাস বলছেন এই ব্যাকটেরিয়া যে প্রোটিনটি ব্যবহার করে, নতুন প্রজন্মের স্প্রে, রোল-অন ডিওডোরেন্টে তা প্রতিরোধী উপাদানই হবে দুর্গন্ধের নতুন অস্ত্র।
কিন্তু তা যতদিন না হচ্ছে ততদিন বাতাস পরিবহনযোগ্য পরিষ্কার পাতলা পোশাক পরুন। নিয়মিত স্নান করুন। দরকারে ডিওডোরেন্ট বা অ্যান্টি-পার্সপির্যান্ট ব্যবহার করুন।
(দ্য রিপোর্ট/এনটি/জুলাই ০৪, ২০১৮)