ছাত্রলীগে পদ প্রত্যাশীদের সঙ্গে শেখ হাসিনার দীর্ঘ সাক্ষাত
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: নেতৃত্ব বাছাইয়ের অংশ হিসেবে পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে পদ প্রত্যাশী ১৬৯জন ছাত্র নেতার সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপমহাদেশের প্রচীনতম ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার সন্ধ্যা সাতটার পরে ছাত্রলীগের পদ প্রত্যাশীদের সঙ্গে বসেন শেখ হাসিনা। ছাত্রনেতাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কী বিষয়ে কথা বলেছেন, তা সর্ম্পকে বিস্তারিত জানা যায়নি।
ঈদের আগেই ছাত্রলীগের এ নেতাদের সঙ্গে বসার কথা ছিলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। সাক্ষাতের পরই দ্রুত সময়ের মধ্যে ছাত্রলীগের জাতীয় কমিটি ঘোষণা করা হবে, কিন্তু তখন তা করা হয়নি।
একটি নির্ভর যোগ্যসূত্র তখন চ্যানেল আই অনলাইনকে নিশ্চিত করেছিলো: ঈদের সামনে কমিটি ঘোষণা করা হলে পদবঞ্চিতরা মন খারাপ করবে। ঈদটাও ভালোভাবে করতে পারে না! এমনটা মনে করে তখন প্রধানমন্ত্রী তাদের সঙ্গে বসেননি। তাই ঈদের পর আজ ছাত্রনেতাদের সঙ্গে বসার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
শুরুতে বলা হচ্ছিলো আজকের বৈঠক শেষেই প্রজ্ঞাপণ আকারে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে। তবে এখন পর্যন্ত কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। আশা করা হচ্ছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ছাত্রলীগের জাতীয় কমিটি ঘোষণা করা হবে।
এবারের সম্মেলনেরআগ থেকেই নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা তুঙ্গে। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে এবং কথাকথিত সিন্ডিকেট প্রথা ভাঙতে কমিটি গঠনের কাজ নিজে দেখভাল করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমনও শোনা গেছে প্রধানমন্ত্রী নেতৃত্ব বাছাইয়ে তার ছয়টি উইং ব্যবহার করেছেন।
জাতীয় নির্বাচনের আগে ছাত্রলীগ যেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা এ গঠনমূলক রাখতে পারে এবং অতীতের বিতর্ক এড়িয়ে চলতে পারে সে লক্ষ্যে এ উদ্যোগ। কয়েকটি সূত্রের দেওয়া তথ্যমতে ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বাইরেও সহ-সভাপতি, যুগ্ম-সাধারণ সম্পদক, সাংগঠনিত সম্পাদক, দপ্তর ও প্রচার সম্পাদকসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদে যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে কমিটি প্রকাশ করা হবে। যাদের বাছাই করবেন সয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শীর্ষ দুই পদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দৌঁড়ে অংশ নিয়েছেন ১৬৯ জন ছাত্র নেতা। এদের মধ্যে আবার অনেকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুই পদের জন্য ফরম তুলেছেন। সে হিসেবে দুই পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বীর সংখ্যা মোট ৩২৩জন। এর মধ্যে সভাপতি পদে ১১১ এবং সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য ২১২জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন।
প্রসঙ্গত, গত ১১ ও ১২ মে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১১ মে বিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলন উদ্বোধন করেন। পরদিন কাউন্সিল অধিবেশনে কাউন্সিলরদের সর্বসম্মতিক্রমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষমতা ছাত্রলীগের অভিভাবক শেখ হাসিনার ওপর অর্পণ করা হয়।
ছাত্রলীগের সম্মেলনের আগ থেকেই আলোচনায় ছিল সংগঠনে বাহিরাগতদের অনুপ্রবেশ। ছাত্রলীগের বিভিন্ন কমিটিতে ছাত্রশিবির, ছাত্রদল, পাক বাহিনীর সহায়তায় গঠিত শান্তি কমিটির কর্মকর্তাদের সন্তান-স্বজনদের নেতৃত্বে বসানোর অভিযোগ ওঠে। ছাত্রলীগের বিগত কমিটির সময়ে দুর্নীতি, চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগে সমালোচিত হয় দেশের প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী এই ছাত্র সংগঠনটি।
এ প্রেক্ষিতে জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ছাত্রলীগকে আরও শক্তিশালী ও স্বচ্ছরূপ দিতে নির্বাচনে মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনের রীতি বদলে সিলেকশন প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব বাছাইয়ে তাগিদ দেন সংগঠনটির অভিভাবক শেখ হাসিনা।
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/জুলাই ০৪,২০১৮)