চলতি অধিবেশনে হরতাল বন্ধ?
সংসদের মেয়াদ বাড়ছে
রানা হানিফ, দিরিপোর্ট২৪ : জাতীয় সংসদের ১৯তম অধিবেশনের মেয়াদ ৭ নভেম্বর পর্যন্ত মুলতবি ঘোষণা করা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন। কতদিন অধিবেশন চলবে এবং হরতাল বন্ধের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত চলতি অধিবেশনে নেওয়া হবে কিনা – এ নিয়েও কথা চলছে।
হরতাল বন্ধের সিদ্ধান্ত আসন্ন অধিবেশনে আসবে কী না এমন প্রশ্নের উত্তরে দফতরবিহীন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, ‘আমি বৃহস্পতিবার সংসদে বলেছি, এখনই সময় হরতালের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার। সংসদ চাইলে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তবে সংসদ কী চাচ্ছে তা আমার জানা নেই।’
সংসদ অধিবেশন চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে কী না জানতে চাইলে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত দিরিপোর্ট২৪ ডটকমকে বলেন, ‘সংসদের মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত অধিবেশন চলবে। নির্বাচনকালীন সময়ে অধিবেশন চালিয়ে নিতে সংবিধানে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। স্পিকার চাইলে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত অধিবেশন চালিয়ে নিতে পারবেন। এখনো বেশ কয়েকটি বিল রয়েছে, যেগুলো পাস করতে হবে। এসব বিল পাসের জন্যও তো অধিবেশন চালাতে হবে।’
অধিবেশনের মেয়াদ প্রসঙ্গে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শওকত আলী দিরিপোর্ট২৪ ডটকমকে বলেন, ‘সংসদের চলতি অধিবেশন আর কত কার্যদিবস চলতে পারে সে ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সংসদ কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আর ব্যাপারটি সম্পূর্ণ স্পিকারের হাতে।’
হরতাল নিষিদ্ধের ব্যাপারে সংসদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু।
তিনি দিরিপোর্ট২৪ ডটকমকে বলেন, ‘আমি ও আমার দল সব সময় হরতালের বিরোধিতা করে এসেছি। আমাদের দলের চেয়ারম্যানের নির্দেশে হরতাল বন্ধের ব্যাপারে সংসদে একটি বেসরকারি বিল উত্থাপন করি। কিন্তু আমার সে বিল তখন পাস করা হয়নি। বর্তমান সংসদের ক্ষমতা আছে হরতাল নিষিদ্ধের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার। বিষয়টি সরকার দলীয় সিনিয়র সদস্যরাও অনুধাবন করছেন। বৃহস্পতিবার সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এ ব্যাপারে সংসদে কথা বলেছেন। আমি মনে করি চলতি অধিবেশনেই হরতালের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।’
নির্বাচনকালীন সময়ে সংসদ অধিবেশন চালিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে সংবিধানে কোন বিধিনিষেধ নেই বলে জানিয়েছেন প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিকুল হক।
তিনি দিরিপোর্ট২৪ ডটকমকে বলেন, ‘নির্বাচনকালীন সময়ে সংসদ অধিবেশন চালিয়ে নেওয়া যাবে না এ ব্যাপারে সংবিধানে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। স্পিকার প্রয়োজন মনে করলে সংসদ চালিয়ে যেতে পারেন।’
হরতাল বন্ধের ব্যাপারে সংসদের ভূমিকা প্রসঙ্গে রফিকুল হক বলেন, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যরা যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। বর্তমানে হরতালের নামে যা হচ্ছে তা মেনে নেওয়া সম্ভব না। তবে কথা হচ্ছে আওয়ামী লীগ যদি হরতাল নিষিদ্ধ করে, তাহলে পরবর্তীতে তারা কি সেটা মানতে পারবে? যে ক্ষমতায় থাকে তার কাছেই হরতাল অগণতান্ত্রিক মনে হয়। আর বিরোধী দলে থাকলে মনে হয় হরতাল গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার।’
(দিরিপোর্ট২৪/আরএইচ/এপি/এইচএস/নভেম্বর ০৮, ২০১৩)