মুক্তিযোদ্ধার বয়স সাড়ে ১২ নির্ধারণ কেন অবৈধ নয়
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : মুক্তিযোদ্ধাদের বয়স ন্যূনতম ১২ বছর ৬ মাস নির্ধারণ করে পরিপত্র জারি কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
রবিবার (১৫ জুলাই) বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
বাংলাদেশ ভূতাত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের পরিচালক মাহমুদ হাসানের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে এই আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এ বি এম আলতাফ হোসেন। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এ আর এম কামরুজ্জামান কাকন ও শুভ্রজিৎ ব্যানার্জি। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক টুটুল।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিদ্যুৎ-জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, অর্থ সচিব, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের মহাপরিচালক, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ও বাংলাদেশ ভূতাত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
পরে আইনজীবী এ আর এম কামরুজ্জামান কাকন বলেন, বাদী মাহমুদ হাসান ১৯৮৮ সালের ২৬ জুন মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভূতাত্বিক জরিপ অধিদপ্তরে চাকরিতে যোগ দেন। তাঁর জন্ম তারিখ অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর তার বয়স হয় ১২ বছর ৪ মাস ১২ দিন।
এর পরিপ্রেক্ষিতেই ভূতাত্বিক জরিপ অধিদপ্তর গত ২ মার্চ এক অফিস আদেশে বাদীকে বলেন, ১৭ জুলাই তার বয়স ৫৯ বছর পূর্ণ হতে চলেছে। সরকারি বিধি অনুযায়ী, ১৮ জুলাই থেকে তাঁর অবসর উত্তর ছুটি (পিআরএল) শুরু হবে। এ অবস্থায় তিনি ছুটি ভোগ করতে চাইলে তাঁকে আবেদন করতে বলা হয়।
পরবর্তী সময়ে বিদ্যুৎ, জ্বলানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ এক অফিস আদেশে জানায়, গত ১৭ জানুয়ারি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় মুক্তিযোদ্ধাদের ন্যূনতম বয়স ১২ বছর ৬ মাস নির্ধারণ করে যে সংশোধিত পরিপত্র জারি করে তাঁর সঙ্গে বাদীর বয়স সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
আইনজীবী বলেন, পাবলিক সার্ভিস রিটায়ারমেন্ট অ্যাক্ট-১৯৭৪ অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মাহমুদ হাসান ৬০ বছর পর্যন্ত চাকরির সুযোগ পাওয়ার কথা। ফলে তাঁর প্রতি যে অফিস আদেশ দেওয়া হয়েছে তা স্পষ্টতই এ আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। যে কারণে তিনি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জারি করা গেজেট, সংশোধিত পরিপত্র ও অফিস আদেশটি চ্যালেঞ্জ করে গত সপ্তাহে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।
রবিবার সেটির শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারির পাশাপাশি অফিস আদেশটির কার্যকারিতা ছয় মাসের স্থগিত করেছেন।
২০১৬ সালে প্রথমে গেজেট প্রকাশ করে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধার ন্যূনতম বয়স হতে হবে ১৩ বছর। এরপর গত ১৭ জানুয়ারি একটা পরিপত্রের মাধ্যমে সে গেজেট সংশোধন করে বলা হয় ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের ন্যূনতম বয়স হতে হবে ১২ বছর ৬ মাস।
(দ্য রিপোর্ট/এনটি/জুলাই ১৫, ২০১৮)