পটিয়ায় বহুতল ভবন হেলে পড়েছে
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: পটিয়া সরকারি কলেজ গেট এলাকার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে জে আলম মার্কেট নামের একটি পাঁচতলা ভবন হেলে পড়েছে।
নির্মাণের তিন বছরের মধ্যেই এটি সম্প্রতি হেলে পড়ে। দোহাজারী সড়ক বিভাগ ও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভবনটি নির্মাণে বিল্ডিংকোড মানা হয়নি। এক্ষেত্রে মহাসড়ক থেকে নির্দিষ্ট দূরত্বও রাখা হয়নি।
ভবনটি রাস্তার পাশে হওয়ায় যে কোনো সময় প্রাণহানীসহ বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে পৌর এলাকার লোকজন। এ কারণে আশপাশের ভবনের বাসিন্দা ও সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
এ ভবনের পাশ দিয়ে পটিয়া সদরে অবস্থিত পটিয়া সরকারি কলেজ, পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, আবদুস সোবহান রাহাত আলী উচ্চ বিদ্যালয়, আবদুর রহমান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, খলিলুর রহমান ডিগ্রি কলেজ, খলিলুরর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়। এসব প্রতিষ্ঠানের কয়েক সহস্রাধিক শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার মানুষ ওই এলাকার সামনে দিয়ে নিয়মিত আসা যাওয়া করেন।
সোমবার সরেজমিন দেখা যায়, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া সদরে অবস্থিত জে আলম মার্কেট নামের ওই পাঁচতলা ভবন উত্তরে হেলে পড়ে পাশের ছয়তলা ভবনের সঙ্গে লেগে গেছে। ভবনের পূর্ব পাশে জেলা পরিষদের একটি পুকুর ও পশ্চিম পাশে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবস্থিত। ভবনটির নিচতলায় পাঁচটি দোকান। দোতলায় কোচিং সেন্টার, তৃতীয় তলায় বিউটি পার্লার, চারতলায় কোচিং সেন্টার এবং পাঁচতলায় রয়েছে আবাসিক বাসা।
পটিয়া পৌরসভার প্রকৌশলী মিজানুর রহমান খন্দকার জানান, ভবনটি হেলে পড়ায় ঝুঁকির সৃষ্টি হয়েছে। তবে ভবনে এখনো কোনো ফাটল দেখা দেয়নি। আরও পর্যবেক্ষণ শেষে বিস্তারিত বলা যাবে। মহাসড়ক থেকে যে দূরত্বে ভবনটি নির্মাণের কথা, এক্ষেত্রে সেটি মানা হয়নি।
ভবনটির মালিক জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে বেশ কয়েকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পাশের ভবনের মালিক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, দুই সপ্তাহ আগে আমাদের ভবনের দিকে জাহাঙ্গীরের ভবনটি হেলে পড়ার বিষয়টি নজরে আসে। এরপর এলাকাবাসীর সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে ২৭ জুন পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পটিয়া পৌরসভা ও ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষকে পৃথকভাবে লিখিত অভিযোগ করি। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পটিয়া পৌরসভার কর্তৃপক্ষ ২৭ জুন জাহাঙ্গীর আলমকে ১৫ দিনের মধ্যে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শসহ কারণ দর্শানোর জন্য নোটিশ প্রদান করে। নোটিশের ১৫ দিন পার হয়ে গেলেও তিনি উল্টো লিখিতভাবে জানান, তার ভবনটি হেলে পড়েনি, আমাদের ভবনটি হেলে পড়েছে। বর্তমানে আমরা জীবনের ঝুঁকিতে রয়েছি।
দোহাজারী সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তোফায়েল মিয়া বলেন, মহাসড়ক থেকে সাধারণত ৩৩ ফুট দূরত্বে ভবন নির্মাণের বিধান রয়েছে। কিন্তু ওই ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে এই নিয়ম মানা হয়নি।
পটিয়া পৌরসভার মেয়র অধ্যাপক হারুনুর রশিদ বলেন, প্রাথমকিভাবে পরিদর্শন করে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে সনাক্ত করা হয়েছে। আরো অধিকতর তদন্ত শেষে আমরা ব্যবস্থা নেবো।
(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/জুলাই ১৬, ২০১৮)