ফুটবলে অতিরিক্ত হেড স্নায়ুর চাপ বাড়ায়
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : হেড দেওয়া ফুটবল খেলার অপরিহার্য একটি অংশ। তবে ক্রমাগত ফুটবলে হেড দিতে থাকলে তা দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
৩০০ জন সাবেক পেশাদার ফুটবলারকে নিয়ে করা একটি গবেষণায় এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছেন বিশেষজ্ঞরা। খবর- বিবিসির।
শারীরিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষমতা যাচাই করার উদ্দেশ্যে কয়েকটি পরীক্ষার নেওয়া হয় ৫০ থেকে ৭০ বছর বয়সী ওই খেলোয়াড়দের।
খেলোয়াড়দের পেশাদার খেলোয়াড়ি জীবনের ইতিহাস ও তাদের দৈনন্দিন জীবনযাপন সংক্রান্ত তথ্যও গবেষণায় আমলে নেওয়া হবে।
এর মাধ্যমে ডিফেন্স বা রক্ষণভাগে খেলা খেলোয়াড়দের - যাদের অন্যান্য পজিশনে খেলোয়াড়দের চেয়ে অপেক্ষাকৃত বেশী হেড করতে হয়। সাথে অন্যান্য পজিশনে খেলা ফুটবলারদের তুলনা করার চেষ্টা করা হবে।
লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিন, কুইন ম্যারি ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন আর ইন্সটিটিউট অব অকুপেশনাল মেডিসিন এই গবেষণা পরিচালনা করবে।
এই গবেষণার ফলাফল ১৯৪৬ সালে করা 'বার্থ কোহর্ট' নামের একটি গবেষণার ফলাফলের সাথে তুলনা করা হবে। ওই গবেষণায় সেবছরে জন্ম নেওয়া মানুষের বার্ধক্যে উপনীত হওয়ার ধারা পর্যবেক্ষণ করা হয়।
লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের শীর্ষ গবেষক নেইল পিয়ার্স বলেন, "আমরা জানি বক্সিং করতে গিয়ে হওয়া মাথার চোটের কারণে স্নায়ুর রোগের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।"
"কিন্তু ফুটবলে ক্রমাগত হেড করতে থাকলে মস্তিষ্কে কোনো সমস্যা হয় কিনা তা আমরা জানিনা।"
পেশাদার ফুটবল খেলার কারণে দীর্ঘমেয়াদে বুদ্ধিবৃত্তিক জটিলতা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে কিনা, সে বিষয়ে এই গবেষণা আলোকপাত করতে পারবে বলে আশা প্রকাশ মি. পিয়ার্স।
পেশাদার ফুটবল ও স্নায়ুরোগের প্রবণতা
গতবছর সাবেক ইংল্যান্ড ফরোয়ার্ড ও বিবিসি'র বিশেষজ্ঞ অ্যালান শিয়ারার এই বিষয়ে বিবিসি'র একটি প্রামাণ্য প্রতিবেদনের উপস্থাপনা করেন।
ঐ প্রতিবেদনে ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ব্রমউইচ অ্যালবিয়নের সাবেক খেলোয়াড় জেফ অ্যাস্টলের ঘটনায় আলোকপাত করেন তিনি।
২০০২'এ ৫৯ বছর বয়সে মারা যাওয়ার আগে তার মধ্যে 'ডিমেনশিয়া'র (বুদ্ধিবৈকল্য) লক্ষণ দেখা যায়।
একজন শবপরীক্ষক ঘোষণা করেছিলেন যে বছরের পর বছর ফুটবলে হেড করায় তার মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল।
ওই প্রতিবেদনের শেষে অ্যালান শিয়ারার বলেন, "বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, বলে হেড করার প্রভাব বিষয়ে খুব কম সংখ্যক গবেষণা হয়েছে।"
গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয় আর হ্যাম্পডেন স্পোর্টস ক্লিনিকের সহায়তায় একটি গবেষণার পৃষ্ঠপোষকতা করার ঘোষণা দেয় ইংল্যান্ডের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন আর পেশাদার ফুটবলারদের সংস্থা। খেলোয়াড়দের মেডিকেল তথ্য যাচাই করে সাবেক খেলোয়াড়দের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের পরিবর্তন মাপা হবে এই গবেষণায়।
স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ উইলি স্টুয়ার্টের নেতৃত্বাধীন ওই গবেষক দলটি জানার চেষ্টা করবেন যে ক্রমক্ষয়িষ্ণু স্নায়ু-বুদ্ধিবৃত্তিক রোগের প্রবণতা সাধারণ মানুষের চেয়ে সাবেক পেশাদার ফুটবলারদের মধ্যে বেশি কি-না।
(দ্য রিপোর্ট/এনটি/জুলাই ১৮, ২০১৮)