দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে কয়লা সংকট নিয়ে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

খনিতে সৃষ্ট পরিস্থিতি সমাধানে কমিটি গঠন করে এই সমস্যা সমাধানের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সোমবার (২৩ জুলাই) সচিবালয়ে এই বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠক সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে বড়পুকুরিয়া ইস্যুতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান আবুল মনসুর মোহাম্মদ ফয়জুল্লাহ’র সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। রবিবার রাতে বড়পুকুরিয়া কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তিনি এই জরুরি বৈঠক ডাকেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়। সূত্র আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী এই সংকট সমাধানে কিছু নির্দেশনার পাশাপাশি দ্রুত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন।

এদিকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বৈঠকের পর সাংবাদিকদের জানান, ‘এক মাসের মধ্যে বড়পুকুরিয়া কয়লা সংকটের সমাধান হবে।’

প্রসঙ্গত, বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে চাহিদামতো কয়লা না পাওয়ায় রবিবার (২২ জুলাই) রাত ১০টা ২০ মিনিটে বড়পুকুরিয়া কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) সদস্য (জনসংযোগ) সাইফুল হাসান চৌধুরী জানান, এই কেন্দ্রের দুই ইউনিটের একটিতে ৮৫ মেগাওয়াট অন্যটিতে ২৭৫ মেগাওয়াট মিলিয়ে মোট ৩৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো। কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন এই বিদ্যুৎ ঘাটতিতে পড়তে হবে।

এর আগে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ যাচাই করতে গিয়ে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে এক লাখ ৩০ হাজার টন কয়লা ‘গায়েব’ হয়ে যাওয়ার তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এ খবরে কয়লা খনির দুই কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার ও দুইজনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কর্তৃপক্ষ। বাজার দর অনুযায়ী, ‘গায়েব’ হয়ে যাওয়া কয়লার মূল্য আনুমানিক ২২৭ কোটি টাকা।

জানা গেছে, কয়লা উত্তোলনের জন্য প্রতি বছর একবার জায়গা পরিবর্তন (শিফট) করে কয়লাখনি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শিফট পরিবর্তনের আগে কয়লা নির্ভর বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রটির জন্য পর্যাপ্ত কয়লা মজুদ রাখা হয়। এবারও শিফট পরিবর্তনের আগে পিডিবিকে এক লাখ টনের বেশি কয়লা মজুদ রয়েছে বলে জানিয়েছিল খনি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু, গত সপ্তাহে পিডিবির সদস্য (উৎপাদন) সাঈদ আহমেদ বড়পুকুরিয়া খনি সরেজমিন পরিদর্শন করে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি ইয়ার্ডসহ আশেপাশে মাত্র ১০ হাজার টন কয়লার মজুদ পান। এ প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও কর্তৃপক্ষের নজরে এলে এ বিষয়ে টনক নড়ে সরকারের।

পিডিবি জানায়, কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রর তিনটি ইউনিট একসঙ্গে চালানো হলে প্রতিদিন পাঁচ হাজার মেট্রিক টন কয়লার প্রয়োজন হয়। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে বিদ্যুৎ সংকট তৈরি হতে পারে।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/জুলাই ২৩, ২০১৮)