দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: 'সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের আশ্রয়দাতা বিএনপির দুর্নীতি ও দুঃশাসনের' প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই দলটির প্রতি জনগণের কোনো আস্থা নেই।

স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে একথা বলেন। খবর বাসসের

তিনি বলেন, 'ব্যাক্তি স্বার্থে যে রাজনীতি, সে রাজনীতি কখনও জনগণ ও দেশকে কিছু দিতে পারে না। ইতিহাস তাদের ক্ষমা করবে না।'

শেখ হাসিনা বলেন, 'এটা প্রমাণিত যে, বিএনপির ওপর জনগণের কোনো আস্থা ও বিশ্বাস নেই। কারণ তাদের শাসনামলে অর্থাৎ ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত মানুষ হত্যা থেকে শুরু করে সীমাহীন দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চলছিল।'

তিনি বলেন, যারা অতীতে লুটপাট করেছে, ভবিষ্যতে ক্ষমতায় আসলে আবারও তারা লুটেপুটেই খাবে এবং শুধু নিজেদের ভাগ্য গড়বে।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে ২০০১ -২০০৬ মেয়াদে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যা, নির্যাতন, বাড়ি ঘর লুটপাট এবং ২০১৩ সালে সন্ত্রাস ও জ্বালাও-পোড়াও এবং নির্বাচন প্রতিহত করার নামে সকারি প্রিসাইডিং অফিসার, বিদ্যুৎ কেন্দ্র পুড়িয়ে দিয়ে সেই আগুনে ফেলে বিদ্যুতের ইঞ্জিনিয়ার হত্যা এবং ২৭ জন আইন-শ্খৃলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যকে হত্যার অভিযোগ করেন।

শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে তার সরকারের সাফল্যগাঁথা ও অর্জনসমূহ জনগণের কাছে তুলে ধরে আগামী সাধারণ নির্বাচনে নৌকার পক্ষে ভোট চাইতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, সংগঠনকে তৃণমূল পর্যায় থেকে আরো সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করতে নেতাকর্মীদেরকে শৃঙ্খলার সঙ্গে কাজ করতে হবে এবং বিগত সাড়ে নয় বছরে তার সরকারের অর্জনগুলো জনগণের কাছে তুলে ধরতে হবে।

দলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাগুলো দেশবাসীর সামনে তুলে ধরার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, 'জনগণকে উন্নয়নের কথাগুলো বারবার বলতে হবে। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা তুলে ধরতে হবে। কারণ সুখ পেলে জনগণ দুঃখের (অতীত স্মৃতি) কথা ভুলে যায়।'

১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই ধানমণ্ডির একটি বাড়িতে পাকিস্তানি বাহিনীর কাছে সপরিবারে বন্দি থাকার সময় জয় জন্মগ্রহণ করেন উল্লেখ করে সে দিনের কথা অনুষ্ঠানে স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, '২৭ জুলাই দিনটি আমার জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। কারণ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে যখন বন্দি ছিলাম তখনই আমার প্রথম সন্তান জয় জন্মগ্রহণ করে। আজকে স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সঙ্গে জয়ের জন্মদিন এক হয়ে গেছে। এজন্য আমার দোয়া ও আশির্বাদ সকলের জন্য।'

আমেরিকায় তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণের পর হত্যার ষড়যন্ত্র করার জন্যও প্রধানমন্ত্রী এ সময় বিএনপি নেতৃবৃন্দকে অভিযুক্ত করেন।

তিনি বলেন, 'তারা (বিএনপি) দুর্নীতির মাধ্যমে এত টাকা বানিয়েছিল যে, আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইর একজন অফিসারকে তারা কিনে ফেলল, জয়কে অপহরণ এবং হত্যা করার জন্য। যা আবার ধরা পড়লো সেই এফবিআইয়ের হাতে।'

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির যে নেতা এই কাজ করেছিল সে ধরা পড়ার পর তার বিচার হলো এবং সেখানে সেই নেতার শাস্তি হয়েছে। সেই মামলার রায়ে বেরিয়েছে— খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাহমুদুর রহমান এবং তথাকথিত বুদ্ধিজীবী শফিক রেহমান অর্থ-পরামর্শ দিয়ে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, এ বিষয়ে এই দু'জনের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোল্লা আবু কাওসারও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পংকজ দেবনাথ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/জুলাই ২৭, ২০১৮)