‘বন্দুকযুদ্ধে’ তিন জেলায় নিহত তিন
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : কুমিল্লা সদর উপজেলায়, সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ও বরগুনার পাথরঘাটায় র্যাব ও পুলিশের সঙ্গে তথাকথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তিনজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে একজন মাদক ব্যবসায়ী, একজন চোর এবং আরেকজন দস্যু হিসেবে পরিচিত।
শুক্রবার (২৭ জুলাই) মধ্যরাত থেকে শনিবার (২৮ জুলাই) ভোর পর্যন্ত এসব ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ঘটনা ঘটে।
কুমিল্লা প্রতিনিধি : কুমিল্লা সদর উপজেলায় র্যাবের সঙ্গে তথাকথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ শহীদুল ইসলাম সফু নামে ২৭ মামলার এক আসামি নিহত হয়েছেন।
শনিবার (২৮ জুলাই) ভোর পৌনে ৪টার দিকে উপজেলার কাপ্তান বাজার গোমতি নদীর বেড়িবাঁধ এলাকায় এ ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে।
র্যাবের দাবি, নিহত শহীদুল মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ২৭টি মামলা রয়েছে। সফু সদর দক্ষিণ উপজেলার একবালিয়া এলাকার বাসিন্দা।
কুমিল্লা র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১১, সিপিসি-২ এর কমান্ডার মেজর আতাউর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, উপজেলার কাপ্তান বাজার গোমতি নদীর বেড়িবাঁধ এলাকায় মাদক কেনা-বেচা হচ্ছে এমন গোপন সংবাদ পেয়ে সেখানে অভিযান চালানো হয়। এ সময় র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে শহীদুল ও তার সহযোগীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি করে। র্যবও পাল্টা গুলি করে। পরে ঘটনাস্থলে শহীদুলকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। এ সময় তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়। শহীদুলের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত শহীদুল এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ২৭টি মামলা রয়েছে।
সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার শ্যামনগরে গ্রেফতারের পর পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ রেজাউল ইসলাম নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন।
পুলিশের দাবি, রেজাউল মোটরসাইকেল চোর চক্রের হোতা। তার বিরুদ্ধে মোটরসাইকেল চুরির ১২টি মামলা রয়েছে। রেজাউল (৪২) শ্যামনগরের বাদোঘাটা গ্রামের আবদুল মাজেদ দফাদারের ছেলে।
শুক্রবার (২৭ জুলাই) মধ্যরাতে শ্যামনগরের খানপুর বাজারের নিকটে একটি ইটভাটার কাছে কালভার্টের ওপর এ ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থল থেকে একটি ওয়ান শুটারগান ও কিছু গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
জেলা পুলিশের তথ্য কর্মকর্তা বিশেষ শাখার পরিদর্শক আজম খান গণমাধ্যমকে জানান, মোটরসাইকেল চোর চক্রের হোতা রেজাউল ইসলামকে ঢাকার পল্লবী থানা পুলিশ বৃহস্পতিবার একটি গোপন আস্তানা থেকে গ্রেফতার করে। শ্যামনগর থানা পুলিশ তাকে শুক্রবার সকালে সাতক্ষীরায় নিয়ে আসে। রেজাউলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী চোরচক্রের আরও তিন সদস্য শামীম, শাহজাহান ও সাহিদুলকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় একটি চোরাই মোটরসাইকেলও জব্দ করা হয়।
তিনি বলেন, রাতে রেজাউলকে নিয়ে খানপুর এলাকায় তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আরও মোটরসাইকেল উদ্ধার করতে গেলে সেখানে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা তাকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এসময় পুলিশকে লক্ষ্য করে তারা গুলি ছুড়লে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এতে গুলিবিদ্ধ হন রেজাউল। তাকে দ্রুত শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত রেজাউলের বিরুদ্ধে ১২টিরও বেশি মোটরসাইকেল চুরির মামলা রয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য তার লাশ সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
বন্দুকযুদ্ধের সময় পুলিশের তিন কনস্টেবল আহত হয়। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
বরগুনা : বরগুনার পাথরঘাটা সংলগ্ন বলেশ্বর নদের মাঝের চরে র্যাবের সঙ্গে তথাকথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দস্যু কাজল বাহিনীর প্রধান কাজল নিহত হয়েছেন।
শনিবার (২৮ জুলাই) ভোরে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
বরিশাল র্যাব-৮ এর বরাত দিয়ে পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা মো. খবির আহম্মেদ গণমাধ্যমকে জানান, পাথরঘাটা সংলগ্ন বলেশ্বরের মাঝের চর এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনার সময় র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ কাজল নামে এক দস্যু নিহত হয়েছেন। এ সময় ৩টি অস্ত্রসহ বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও জানান, র্যাবের পক্ষ থেকে পাথরঘাটা থানায় মরদেহ ও অস্ত্র-গোলাবারুদ্ধ হস্তান্তর করা হবে। নিহত দস্যু কাজল বাহিনী প্রধান কাজল বলে জানা গেছে। তবে তার ঠিকানা জানা যায়নি।
এর আগে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি বলেশ্বর নদের মাঝের (বিহঙ্গ) চরে র্যাবের সঙ্গে মুন্না বাহিনীর ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তিন দস্যু নিহত হন। আর গত ৫ মার্চ একই জায়গায় নিহত হন আরো ২ দস্যু।
(দ্য রিপোর্ট/এনটি/জুলাই ২৮, ২০১৮)