ফারমার্স ব্যাংকের ছয় কর্মকর্তাসহ ১১ জনকে দুদকে তলব
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ফারমার্স ব্যাংকের ছয় কর্মকর্তাসহ ১১ জনকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতির মাধ্যমে ব্যাংকের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ ও বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে। এই অভিযোগ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রোববার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে তাদের হাজির হতে বলা হয়েছে।
সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল ৩টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ওই ১১ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন দুদকের উপ-পরিচালক ও অভিযোগটির অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা মো. সামছুল আলম।
এর আগেও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তলব করা ওই ১১ কর্মকর্তার মধ্যে ব্যাংকের ছয়জন ও নাহার ফারমার্স গ্রুপের পাঁচজন।
গত ১০ এপ্রিল ফারমার্স ব্যাংকের অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতীসহ ছয় জনকে আসামি করে মামলা করেছে দুদক। গ্রাহকের হিসাব থেকে চিশতীর নিজের ও তার পবিারের পোষ্যদের হিসাবে স্থানান্তর করে ১৬০ কোটি টাকা আত্মসাতের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে ওই এজাহারে।
মামলা দায়েরের দিনই ছয় আসামির মধ্যে বাবুল চিশতীসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। অন্য তিনজন হলেন বাবুল চিশতীর ছেলে রাশেদুল হক চিশতী, ব্যাংকের ফার্স্ট প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মাসুদুর রহমান খান ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জিয়া উদ্দিন আহমেদ। চিশতীসহ চারজনই বর্তমানে জেলে আছেন।
ফারমার্স ব্যাংকের দুর্নীতি মামলায় অন্য দুই আসামি হলেন, চিশতীর স্ত্রী রুজী চিশতী ও ব্যাংকের এসইভিপি ও গুলশান শাখার সাবেক ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন। এরই মধ্যে রুজী চিশতী হাইকোর্ট থেকে ছয় মাসের জামিন নিয়েছেন। চিশতীও জামিন নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
সূত্র জানায়, একটি নতুন অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ১১ জনকে আজ জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। অভিযুক্ত ছয় ব্যাংক কর্মকর্তা হলেন ভিপি মো. শাহজাহান আমীন, আশীষ কুমার লস্কর, এভিপি অসীম কুমার দাস, ইভিপি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম মজুমদার, কর্মকর্তা সাবিনা রহমান ও এসইও নাবিল মুনতাসির।
বাকি পাঁচজন হলেন নাহার ফারমার্স গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল মনসুর রুবেল, পরিচালক রিফাত বিনতে মনসুর, ইশরাত জাহান লুনা, ইশফাক বিন মনসুর ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তপন চন্দ্র শীল।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, জামিনে অর্থ খরচের জন্য এরই মধ্যে চিশতীর বেনামে থাকা কিছু সম্পদ বিক্রি করা হয়েছে। আরও সম্পদ বিক্রির চেষ্টা করা হচ্ছে। এই অবস্থায় চিশতী জামিনে মুক্ত হলে মামলার তদন্তে নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করবেন বলে আশঙ্কা রয়েছে। ব্যাংকে সংরক্ষিত মামলার আলামত গোপনে নষ্ট করার চেষ্টা করবেন বলে সংশ্নিষ্টদের ধারণা। তিনি এতে সফল হলে মামলার তদন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
ব্যাংকটির পদত্যাগী চেয়ারম্যান মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতীর বিরুদ্ধে ঋণ জালিয়াতি, ঋণে কমিশন নেওয়া, গ্রাহকের হিসাব থেকে নিজের হিসাবে অর্থ স্থানান্তর ও অনিয়ম, দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। এই অভিযোগ সম্পর্কে এখন পর্যন্ত মহীউদ্দীন খান আলমগীরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি।
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/জুলাই ২৮,২০১৮)