দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : শহীদ রমিজ উদ্দিন কলেজের দুই শিক্ষার্থী বাসচাপায় নিহত হওয়ার প্রতিবাদে রাজধানীর ব্যস্ততম বিমানবন্দর সড়ক অবস্থান নিয়েছে বিভিন্ন স্কুল কলেজের শত শত শিক্ষার্থী।

তারা সড়ক হত্যায় জড়িত পরিবহনের মালিক, শ্রমিকদের কঠোর শাস্তি দাবি করছে। পাশাপাশি দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে হাসতে হাসতে প্রতিক্রিয়া জানানোয় নৌপরিহন মন্ত্রী শাজাহান খানের পদত্যাগ দাবি করেছেন। শিক্ষার্থীরা ‘বিচার চাই বিচার চাই, ছাত্র হত্যার বিচার চাই’বলে স্লোগান দিচ্ছে।

সোমবার (৩০ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে শিক্ষার্থীরা কলেজের সামনের রাস্তায় মানববন্ধন করতে গেলে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়। এরপর ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা কুর্মিটোলা হাসপাতালের সামনে রাস্তা অরবোধ করতে যায়। অবরোধের কারণে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এ ব্যস্ততম সড়কে।

শিক্ষার্থীরা জানায়, তাদের সহপাঠিদের হত্যাকারী বাসচালক ও হেলপারের শাস্তি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত তাপদের আন্দোলন চলবে।

তারা অভিযোগ করে, পুলিশ তাদের রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করতে দিচ্ছে না। জোর করে শিক্ষার্থীদের বাসে তুলে দিচ্ছে পুলিশ।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করতে আসছি। কিন্তু পুলিশ আমাদের জোর করে সরিয়ে দিচ্ছে। হুমকি দিচ্ছে।

শহীদ রমিজ উদ্দিন কলেজের শিক্ষার্থীদের সাথে যোগ দিয়েছে আদমজী স্কুল, কুর্মিটোলা শাহীন, বিএফ শাহীন, ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের বেশ কিছু শিক্ষার্থী।

রবিবার (২৯ জুলাই) কুর্মিটোলায় জাবালে নূর পরিবহনের বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। নিহতরা হলেন- উচ্চমাধ্যমিক প্রথমবর্ষের ছাত্রী দিয়া আখতার মিম এবং দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবদুল করিম। এতে আহত হয়েছিলেন আরও বেশ কয়েকজন।

এদিকে রবিবার সচিবালয়ে মোংলাবন্দরের জন্য মোবাইল হারবার ক্রেন ক্রয়সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানকে সাংবাদিকরা দুই শিক্ষার্থীর বাসচাপায় নিহত হওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করেন।

এ সময় মন্ত্রী হাসতে হাসতে পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘এটির সঙ্গে কি এটি রিলেটেড?’ তার পর বেশ কিছুক্ষণ হেসে বিষয়টি তিনি উড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন।

তখন সাংবাদিকরা বলেন, ‘চালকদের স্বেচ্ছাচারিতায় সড়কে নিয়মিত প্রাণ ঝরছে। আজও ঢাকার কুর্মিটোলায় একটি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ রয়েছে এদের (চালক-হেলপার) আপনিই প্রশ্রয় দেন। আপনার প্রশ্রয়ে তারা স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠছে।’ তখন নৌমন্ত্রী বলেন, ‘আমি শুধু এটুকু বলতে চাই- যে যতটুকু অপরাধ করবে, সে সেভাবেই শাস্তি পাবে। এই শাস্তি নিয়ে বিরোধিতা করার কারও কোনো সুযোগ নেই।’

এ পর্যন্ত বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির বিষয়ে যথাযথ বিচার হয় না বা হচ্ছে না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী আবারও হাসতে হাসতে বলেন, ‘আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের মহারাষ্ট্রে কিছু দিন আগে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৩ যাত্রী মারা গেলেন। সেখানে কেউ কি এ রকম কথা বলে।’

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/জুলাই ৩০, ২০১৮)