বরিশাল প্রতিনিধি : ভোট জালিয়াতি, কেন্দ্র দখল, প্রকাশ্যে ব্যালট পেপারে নৌকা প্রতীকে সিল মারাসহ বিভিন্ন অভিযোগে পরিপ্রেক্ষিতে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার, ইসলামী আন্দোলনের মেয়রপ্রার্থী হাফেজ মাওলানা ওবাইদুর রহমান মাহবুব ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) মেয়রপ্রার্থী মনীষা চক্রবর্তী ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।

এছাড়া একই অভিযোগে সিলেটের মেয়রপ্রার্থী বিএনপি সমর্থিত ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী ও বরিশালের জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস নির্বাচন বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।

সোমবার (৩০ জুলাই) দুপুর সংবাদ সম্মেলন করে মজিবর রহমান সরোয়ার, ওবাইদুর রহমান মাহবুব ও মনীষা চক্রবর্তী ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।

এছাড়া সোমবার দুপুরে সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে গিয়ে আরিফুল হক চৌধুরী ও বরিশালে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ভোট বাতিলের এই দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে মজিবর রহমান সরোয়ার অভিযোগ করে বলেন, বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যে নগরীর ৮০টির বেশি কেন্দ্র দখলে নিয়ে নিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা। তারা সেখানে প্রকাশ্যে ব্যালট পেপারে নৌকা প্রতীকে সিল মেরে বাক্সে ফেলছে।

এছাড়াও তিনি ভোট কারচুপি, এজেন্টদের মারধর ও কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ তোলেন।

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) মেয়রপ্রার্থী মনীষা চক্রবর্তী গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে অভিযোগ করেন, তিনি সদর গার্লস স্কুল কেন্দ্রে গিয়ে প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকে সিল মারতে দেখেন। প্রতিবাদ করলে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। অভিযোগ জানানোর পরও এই কেন্দ্রে নির্বাচন এখনও চলছে। এই কেন্দ্রের মতো সব কেন্দ্রেই নৌকায় সিল মারা হচ্ছে।

ইসলামী আন্দোলনের মেয়রপ্রার্থী হাফেজ মাওলানা ওবাইদুর রহমান মাহবুব সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, সকাল ৮টার দিকে ভোট শুরুর পরই সরকারদলীয় মেয়রপ্রার্থীর সমর্থকরা কেন্দ্রে ঢুকে জালভোট দেন। এতে ভোটের পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। এ কারণেই ভোট বর্জন করেছে ইসলামী আন্দোলন।

এদিকেসিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে গিয়ে মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, সিলেটের অধিকাংশ কেন্দ্রে ভোট ডাকাতি করে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। তবুও নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নীরব দর্শকের ভূমিকায় রয়েছে। নির্বাচন কমিশনের অফিসকে জানিয়েছি সকাল থেকে ১৯,২০ ও ২১ নং ওয়ার্ডসহ আরও কয়েকটি কেন্দ্রে আমার ধানের শীষের এজেন্টদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এছাড়াও জাতীয় পার্টির এমপি ইয়াহিয়া চৌধুরী এহিয়া, বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা সাধারণ ভোটারদের অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে কেন্দ্রে থেকে বের করে দিয়ে ব্যালেটে সিল দিয়ে বাক্সে ভরে রাখে। এই নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন দেওয়ার দাবি নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছি।

একইভাবে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস বরিশালে ভোট স্থগিত চেয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছেন বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, সোমবার সিলেটের পাশাপাশি বরিশাল ও রাজশাহীতেও সিটি নির্বাচন হচ্ছে। কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে বরিশালেও বিএনপির প্রার্থী মজিবর রহমান সরওয়ার নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। রাজশাহীতে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলও কেন্দ্র থেকে তার এজেন্টদের বের করে দেওয়া, ভোটারদের ভয় দেখানো, ব্যালটে জোর করে সিল মারাসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/জুলাই ৩০, ২০১৮)