আরিফুল এগিয়ে থাকলেও ঝুলে থাকল সিলেটের ফল
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ১৩৪টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩২টি কেন্দ্রের ফলাফলে এগিয়ে আছেন বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী, ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৯০ হাজার ৪৯৬ ভোট।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বদর উদ্দীন আহমদ কামরান নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৮৫ হাজার ৮৭০ ভোট।
সোমবার অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে দুটি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত হয়; সেখানে মোট ভোট সংখ্যা ৪ হাজার ৭৮৭টি।
শীর্ষ দুই প্রার্থীর ভোটের ব্যবধান এর চেয়ে কম ৪ হাজার ৬২৬টি হওয়ায় ফল ঘোষণা করেননি রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলীমুজ্জামান।
সোমবার রাত সাড়ে ১১টার পর তিনি যখন নগরীর উপশহরে স্থাপিত ফল ঘোষণা কেন্দ্র থেকে এই সিদ্ধান্ত জানান তার আধা ঘণ্টা আগে গণনায় অনিয়মের অভিযোগ তুলে পুনর্গণনার দাবি জানানো হয় কামরানের শিবির থেকে।
এসময় বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক ফল ঘোষণার ওই কেন্দ্রে উপস্থিত ছিলেন। তিনি ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরপরই অনিয়মের অভিযোগ তুলে বলেছিলেন, ফল যাই হোক না কেন, তিনি তা প্রত্যাখ্যান করছেন।
রাত ১১টায় কামরানের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করে ভোট পুনর্গণনার দাবি তোলেন।
তিনি বলেন, বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে তারা যে ফলাফল পেয়েছেন, তা রিটার্নিং কর্মকর্তার ঘোষিত ফলাফলের সঙ্গে মিলছে না।
সিরাজ সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা নির্বাচনের ফলাফল স্থগিত, ভোট পুনর্গননা এবং কয়েকটি কেন্দ্রে পুনরায় ভোট নেওয়ার জন্য বলেছি। কারণ এখানে যে ফলাফল ঘোষণা করা হচ্ছে কেন্দ্রে আমাদের পোলিং এজেন্টদের দেওয়া ফলাফলের সঙ্গে মিলছে না।”
তখন রিটার্নিং কর্মকর্তা ফল ঘোষণা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে ১৩২টি কেন্দ্রের ফল ঘোষণা করেন তিনি।
তিনি জানান, মোট ১ লাখ ৯৮ হাজার ৬৫৬ জন ভোটার ভোট দিয়েছেন। বাতিল হয়েছে ৭ হাজার ৩৬৭টি ভোট।
এরপর আলীমুজ্জামান সব মেয়র প্রার্থীর ভোট সংখ্যা জানিয়ে দুটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিতের বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, স্থানীয় সরকার আইন অনুযায়ী এখন ওই দুই কেন্দ্রে নতুন ভাবে ভোটগ্রহণের নির্দেশ দেবে নির্বাচন কমিশন।
শীর্ষ দুই প্রার্থীর ভোটের ব্যবধান স্থগিত কেন্দ্র দুটির মোট সংখ্যার চেয়ে কম বলে ফল ঘোষণা না করার কথা জানান তিনি।
২৪ নম্বর ওয়ার্ডের গাজী বোরহান উদ্দিন (রহ.) মাদ্রাসা (১১৬নং কেন্দ্র)ও ২৭নং ওয়ার্ডের হবিনন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৩৪নং কেন্দ্র) কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়।
গাজী সৈয়দ বোরহান উদ্দিন (রহ.) মাদরাসা কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ২২১ জন ও হবিনন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৫৬৬ জন।
সিলেটে মোট ভোটার ৩ লাখ ২১ হাজার ৭৩২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৭১ হাজার ৪৪৪ জন এবং নারী ১ লাখ ৫০ হাজার ২৮৮ জন।
একজন মেয়র, ২৭ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং ৯ জন নারী কাউন্সিলর নির্বাচনে ভোট দেন ভোটাররা।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের যাত্রা শুরু হয় ২০০২ সালে।
২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কামরানকে প্রায় ৩৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র হন বিএনপির আরিফুল হক চৌধুরী। সেবার ভোট পড়েছিল ৬২%।
২০০৮ সালে ভোটে জিতে কামরান মেয়র নির্বাচিত হয়ে পরের বার হেরেছিলেন। এবার নিয়ে টানা তিনবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেন তিনি।
বরিশাল ও রাজশাহীর সঙ্গে সোমবার সিলেট সিটিতেও একযোগে ভোটগ্রহণ হয়।
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/জুলাই ৩১, ২০১৮)