রাজধানীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে সড়কের বাস উধাও
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: রাজধানীতে জাবালে নূর পরিবহনের চাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর প্রতিবাদে কয়েকটি স্থানে বিক্ষোভের মধ্যে সড়ক থেকে বাস সরিয়ে নিয়েছেন পরিবহন মালিকরা।
এর ফলে বিক্ষোভে সড়ক আটকে থাকায় রাজধানীবাসীর চলাচল যেমন আটকে গেছে; অন্যদিকে গণপরিবহন না পেয়েও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
রবিবার ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর বিমানবন্দর সড়কে গাড়ি ভাংচুরের পর রাস্তা আটকে বিক্ষোভ করেছিল শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থীরা।
পরদিন তাদের পাশাপাশি ধানমণ্ডিতে কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীরাও সড়কে নেমে বিক্ষোভ দেখায়। মঙ্গলবার ওই দুটি স্থানের পাশাপাশি ফার্মগেইট, মতিঝিল, শ্যামলী ও কাকরাইল এলাকায়ও সড়ক অবরোধ হয়; ভাংচুর হয় কিছু গাড়িও।
এর মধ্যেই মঙ্গলবার দুপুর থেকে ঢাকার বিভিন্ন সড়কে বাসের সংখ্যা কমে যায়। মিরপুর, শ্যামলী, মহাখালী, বিজয় সরণি, উত্তরা, ফার্মগেইট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হাজার হাজার মানুষ বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন। কয়েকটি বাস এলেও তাতে সবাই উঠতে পারছেন না।
দুপুরে মহাখালী ফ্লাইওভারের পাশে উত্তরার বাসের অপেক্ষায় থাকা মো. আবদুল্লাহ বলেন, ‘অনেক সময় ধরে দাঁড়িয়ে থেকেও কোনো বাস পাচ্ছি না। এতে চরম ভোগান্তিতে রয়েছি।’
বাস কম থাকার কারণ জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব এনায়েত উল্লাহ খান বলেন, ভাংচুরের কারণে চালকরা বাস চালাতে চাইছেন না।
সড়কে বাস বের করলেই সেগুলো ভাংচুর করা হচ্ছে। এজন্য সকালে বাস বের হলেও নিরাপত্তার কারণে বাসগুলো রাস্তা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ভয়ে বাস চালকরা রাস্তায় বাস বের করতে চাচ্ছেন না।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বাস ভাংচুরের প্রতিবাদ জানান।
তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনায় আমরাও দুঃখ প্রকাশ করছি, যারা এই ঘটনায় জড়িত তাদের বিচার আমরাও চাই।
তাই বলে রাস্তায় কোটি কোটি টাকার গাড়ি বের হলেই সেটা ভাঙবে, এটা কেমন কথা? প্রশাসনও তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।
সকাল থেকে উত্তরা, ঢাকা কলেজের সামনে, শ্যামলী ও স্টাফ রোডে বহু গাড়ি ভাঙা হয়েছে বলে দাবি করেন এই পরিবহন শ্রমিক নেতা।
তিনি বলেন, ‘গাড়ি ভাঙার পেছনে কারা আছে, তাদের আসল উদ্দেশ্য কী? সেটা প্রশাসনের কাছে আমরা জানতে চাই।’
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের; তিনি দোষী চালকদের বিচারের আশ্বাসও দিয়েছেন।
দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর দোষী চালকের ফাঁসিসহ নয় দফা দাবি জানিয়েছে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা।
তারা পরিবহন শ্রমিক নেতা ও নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে, রাস্তায় ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল এবং লাইসেন্স ছাড়া চালকদের গাড়ি চালনা বন্ধ করার দাবিও রয়েছে তাদের।
শিক্ষার্থীদের প্রতি সহমর্মী হলেও ভাংচুরে উদ্বেগ জানিয়েছেন শ্যামলীতে বাসের অপেক্ষায় থাকা নাসরিন সুলতানা।
তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীর মৃত্যুর বিচার পুরো দেশবাসী চায়। কিন্তু যেভাবে বাস ভংচুর করে ভয় তৈরি করা হচ্ছে, সেটা খুবই উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/জুলাই ৩১, ২০১৮)