দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম নুরুল আওরঙ্গজেবকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

নুরুল আওরঙ্গজেব বর্তমানে মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানির এমডি হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

জালিয়াতির মাধ্যমে ১ লাখ ১৬ হাজার মেট্রিক টন কয়লা খোলা বাজারে বিক্রি করে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বুধবার (১ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্ত কর্মকর্তা ও দুদক উপপরিচালক মো. শামসুল আলম।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য গণমাধ্যমকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে এ ঘটনায় গত ২৭ জুলাই রাত ১২টায় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আনিছুর রহমান বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় ১৯ জন আসামির বিরেুদ্ধে খনির ১ লাখ ৪৫ হাজার টন কয়লা গায়েবের অভিযোগ আনা হয়। যা পরবর্তীতে দুদক তদন্ত শুরু করে।

এরই ধারাবাহিকতায় মামলার ১৯ আসামিসহ পেট্রোবাংলার ২১ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞায় চিঠি দেয় দুদক। ১৯ আসামিসহ নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা হলেন- মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) আবু তাহের মো. নুরুজ্জামাম চৌধুরী, উপ-মহাব্যবস্থাপক খালেদুল ইসলাম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিব উদ্দিন আহমদ, মহাব্যবস্থাপক (জেনারেল সার্ভিস) মাসুদুর রহমান হাওলাদার, ব্যবস্থাপক (প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট) অশোক কুমার হাওলাদার, ব্যবস্থাপক (মেইনটেনেন্স অ্যান্ড অপারেশন) আরিফুর রহমান, ব্যবস্থাপক (ডিজাইন, কন্সট্রাকশন অ্যান্ড মেইনটেনেন্স) জাহিদুল ইসলাম, উপব্যবস্থাপক (সেফটি ম্যানেজমেন্ট) আকরামুল হক, উপব্যবস্থাপক (কোল হ্যান্ডলিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট) খলিলুর রহমান, উপব্যবস্থাপক (মেইনটেনেন্স অ্যান্ড অপারেশন) মোরশেদুজ্জামান, উপব্যবস্থাপক (প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট) হাবিবুর রহমান, উপব্যবস্থাপক (মাইন ডেভেলপমেন্ট) জাহিদুর রহমান, উপব্যবস্থাপক (ভেন্টিলেশন ম্যানেজমেন্ট) সত্যেন নাথ বর্মণ, ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) সৈয়দ ইমাম হাসান, উপমহাব্যবস্থাপক (মাইন প্ল্যানিং অপারেশন) জোবায়ের আলী, সাবেক মহাব্যবস্থাপক (ফাইন্যান্স) আব্দুল মান্নান পাটোয়ারি ও গোপাল চন্দ্র সাহা, সাবেক মহাব্যবস্থাপক (এক্সপ্লোরেশন), কোম্পানি সেক্রেটারি আবুল কাশেম প্রধানিয়া ও মোশারফ হোসেন। আসামির বাইরে কোল মাইনিং কোম্পানির প্রাক্তন এমডি কামরুজ্জামান ও আমিনুজ্জামানের বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে কাগজে-কলমে বেশি কয়লার মজুত দেখিয়ে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে খতিয়ে দেখতে ২৩ জুলাই তিন সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছিল।

দুদকের উপপরিচালক শামসুল আলমের নেতৃত্বে গঠিত এই কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন সহকারী পরিচালক এ এস এম সাজ্জাদ হোসেন ও উপসহকারী পরিচালক এ এস এম তাজুল ইসলাম।

অভিযোগের বিষয়ে দুদক জানায়, ২০০৫ সালে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে বাণিজ্যিকভাবে কয়লা উত্তোলন শুরু করা হয়। দীর্ঘ ১৩ বছরে কয়লা উত্তোলন হয়েছে ১ কোটি ২০ লাখ টন। বর্তমানে কোল ইয়ার্ডে কয়লার মজুত থাকার কথা ১ লাখ ৩০ হাজার টন। কিন্তু বাস্তবে কয়লার মজুত পাওয়া গেছে ১৪ হাজার টনের মতো। ১ লাখ ১৬ হাজার টনের মতো কয়লার কোনো হদিস নেই। যার বাজার মূল্য প্রায় ২০০ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন, দীর্ঘ দিন থেকে একটি চক্র চুরি করে খোলা বাজারে এসব কয়লা বিক্রি করে দিয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/আগস্ট ০১, ২০১৮)