দ্য ‍রিপোর্ট প্রতিবেদক: সড়ক এবং যে কোনো ধরনের সংঘাত থেকে শিশু ও যুবকদের নিরাপদ রাখতে রবিবার সব দলের প্রতি জরুরি ভিত্তিতে আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।

ঢাকায় জাতিসংঘ অফিস এ বিষয়ে তাদের ফেসবুক পেজে এক বিবৃতি পোস্ট করেছে।

যেখানে তারা বলছে, ‘ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান আন্দোলনে শিশু এবং যুবকদের নিরাপত্তা নিয়ে জাতিসংঘ সংস্থাগুলো উদ্বিগ্ন।’

জাতিসংঘ বলছে, নিরাপদ সড়কসহ উদ্বিগ্ন যে কোনো বিষয়ে কথা বলার যৌক্তিক অধিকার শিক্ষার্থী এবং যুবকদের রয়েছে। এছাড়া কোনো রকমের সহিংসতার হুমকি ছাড়াই তাদের মতামতও শুনতে হবে।

নিরাপদ সড়কের জন্য দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ব্যাপী প্রচারণা চালিয়ে আসছে জাতিসংঘ। বিশ্বের যতগুলো দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় যুবক নিহত হয় বাংলাদেশে তার সংখ্যা বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে প্রতি বছরে বাংলাদেশে ২০ হাজারেরও বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে।

জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক মিয়া সেপ্পো বলেন, ‘সহিংসতার খবরে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। সড়কে নিরাপত্তা নিয়ে যুবকদের উদ্বেগ প্রকাশ যৌক্তিক এবং ঢাকার মতো বড় শহরে এর একটি সমাধান প্রয়োজন।’

তিনি বলেন, শিশু, তরুণী এবং নারীসহ সবার নিরাপত্তার জন্য কার্যকর গণপরিবহন পদ্ধতি নিশ্চিত করা উচিত।

জাতিসংঘের বিবৃতিতে বলা হয়, রাজধানীতে গত কয়েকদিনের আন্দোলনে অংশ নেয়া যুবকদের আহতের ঘটনা গভীর উদ্বেগের বিষয়।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, আন্দোলনের ফলে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীরা শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

এদিকে নিরাপদ সড়কের দাবিতে সপ্তাহব্যাপী চলমান আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকে কোনোভাবেই ‘ন্যায়সঙ্গত’ বলা যায় না বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এক পোস্টের মাধ্যমে এ কথা বলা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস ওই পোস্টে বলছে, বাংলাদেশে নিরাপদ সড়কের দাবিতে স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের নেতৃত্বে সপ্তাহব্যাপী শান্তিপূর্ণ আন্দোলন হয়ে আসছে।

পোস্টে আরো বলা হয়, ‘যদিও আমরা বাস ও অন্যান্য যানবাহন ভাঙচুরসহ সম্পত্তি ধ্বংসের মতো কাজে নিয়োজিত কয়েকজনের কর্মকে সমর্থন করি না, তবে নিরাপদ বাংলাদেশের জন্য হাজার হাজার তরুণ, যারা শান্তিপূর্ণভাবে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করছে তাদের ওপর আক্রমণ ও সহিংসতাকে কোনোভাবে ন্যায়সঙ্গত বলা যায় না।’

নিরাপদ সড়কের দাবিতে রবিবার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী শাহবাগে অবস্থান নেয়। শহরের সবচেয়ে ব্যস্ততম এই মোড়ে শনিবার জিগাতলায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানান তারা।

সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং বুয়েটের শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড়ে জড়ো হতে থাকেন। এসময় যান চলাচল ব্যাহত হয়।

এদিকে রবিবার জিগাতলা এবং সাইন্স ল্যাবরেটোরি এলাকায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ছবি তুলতে গিয়ে কয়েকজন ফটোসাংবাদিক হামলার শিকার হন।

আহতরা হলেন- আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এসোসিয়েট প্রেসের (এপি) এএম আহাদ, জনকণ্ঠের জাওয়াদ, বণিক বার্তার পলাশ, যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক জুমা প্রেসের রিমন, দৈনিক নয়াদিগন্তের শরীফ, ফ্রিল্যান্সার রাহাত এবং পাঠশালা দক্ষিণ এশীয় মিডিয়া ইনস্টিটিউটের ফটোগ্রাফি শিক্ষার্থী এনামুল হাসান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা দেড়টার দিকে একদল যুবক লাঠিসোটা নিয়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলা করে। হামলাকারীরা ছাত্রলীগের কর্মী বলে দাবি করেন তারা।খবর-ইউএনবি

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/আগস্ট ০৫, ২০১৮)