বিশ্ববরেণ্য বুদ্ধিজীবীরা মুক্তি চাইলেন শহিদুল আলমের
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : বিশিষ্ট আলোকচিত্রী ও দৃক গ্যালারির প্রতিষ্ঠাতা শহিদুল আলমের মুক্তি চেয়েছেন নোয়াম চমস্কি ও অরুন্ধতী রায়সহ বিশ্ববরেণ্য বুদ্ধিজীবীরা। শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে তারা শহিদুল আলমকে মুক্তি দিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
মার্কিন লেখক ও দার্শনিক নোয়াম চমস্কি, কানাডার লেখক নওমি ক্লেইন, ভারতীয় লেখক অরুন্ধতী রায় ও বুদ্ধিজীবী বিজয় প্রসাদসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ২৫ লেখক-সাংবাদিক-শিক্ষাবিদ যৌথভাবে এই বিবৃতি দেন।
দলিল তৈরি (ডকুমেন্টেশন) ও সমালোচনা মানব জীবনের মৌলিক অংশ— একথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে তারা বলেন, 'যা ঘটছে তা নিয়ে একজন নাগরিকের বলার অধিকার এবং উত্তেজিত হওয়ার অধিকারকে কোনো রাষ্ট্রের পক্ষে অস্বীকার করা মানেই মৌলিক অধিকার অস্বীকার।'
ইমেইলে পাঠানো বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'কারাগারে শহিদুল আলমকে নির্যাত করা হয়েছে বলে খবর প্রকাশ হয়েছে। জনপ্রিয় এই ফটোগ্রাফার ও শিক্ষককে আটকের ঘটনায় ব্যাপক হতাশার খবরও এসেছে।'
শহিদুল হকের ২০১৪ সালে শিল্পকলা পদক পাওয়ার কথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, শহিদুল আলমের হাতে এই পদক তুলে দিয়েছিলেন বাংলাদেশের বর্তমান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
বিবৃতিতে শহিদুল আলমের মুক্তি দাবি করে বলা হয়, 'বাংলাদেশের যে সরকার শহিদুল আলমকে এই উচ্চ পর্যায়ের সম্মাননা প্রদান করেছে, সেই সরকারের উচিত তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ প্রত্যাহার করে অবিলম্বে তাকে মুক্তি দেওয়া।'
দৃক গ্যালারির প্রতিষ্ঠাতা শহিদুল আলম নিরাপদ সড়কের দাবিতে সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলন নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেন। এ ঘটনায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনে রমনা থানায় ৬ আগস্ট করা মামলায় তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর শহিদুল আলমকে আদালতে হাজির করা হলে তাকে সাতদিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন বিচারিক আদালত। পরে ওই আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ ও শহিদুল আলমের সুচিকিৎসার নির্দেশনা চেয়ে তার স্ত্রী রেহনুমা আহমেদ হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন।
ওই রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট শহিদুল আলমকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে কি-না, তা জানতে চেয়ে তাকে পরীক্ষা করে ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। আগামী ১৩ আগস্টের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এ প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এরইমধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় রিমান্ডে থাকা শহিদুল আলম নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে তার উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচারের জন্য ভুল স্বীকার করে অনুতপ্ত হয়েছেন বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/আগস্ট ১১,২০১৮)